নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কানাডায় ঢুকতে না পেরে দেশে ফেরার পর থেকে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলার উদ্যোগ নিচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। কিন্তু তিনি কোথায় আছেন, তা কেউ বলতে পারছেন না। বিমানবন্দর থেকে তিনি উত্তরায় এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন বলে শোনা গেলেও ওই বাসার নিরাপত্তাকর্মীর দাবি, মুরাদ ওই বাসায় যাননি।
নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জেরে গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন মুরাদ হাসান। এর আগে ৬ ডিসেম্বর থেকেই অনেকটাই আড়ালে চলে যান তিনি। পদত্যাগপত্রও তিনি মেইলে পাঠান। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কানাডার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। ওই দিনও তিনি কারও সঙ্গে কথা বলেননি।
কানাডায় ঢুকতে না পেরে রোববার দেশে ফেরেন। এরপর থেকে এখনো আড়ালে আছেন।
বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভিআইপি টার্মিনালের গেট দিয়ে বের হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সবার চোখকে ফাঁকি দিতে অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে বের হয়ে যান তিনি। বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে নিজের ধানমন্ডির বাসায় না গিয়ে তিনি উত্তরা এক নম্বর সেক্টরের এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছেন বলে শোনা যায়।
এ ছাড়া রোববার বিকেলে বিমানবন্দরে অবতরণের পরে কিছুক্ষণ মুরাদের ব্যক্তিগত নম্বর সচল পাওয়া যায়। সে সময় দুইবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। সন্ধ্যা সাতটার পর আবারও ফোন দিলে সেটা বন্ধ পাওয়া যায়। গতকাল সোমবারও বন্ধ পাওয়া যায় তাঁর ফোন।
উত্তরার যে বাসায় তিনি উঠেছেন বলে জানা গিয়েছিল গতকাল আজকের পত্রিকার উত্তরা প্রতিবেদক গিয়েছিলেন ওই বাসায়। বাসার নিরাপত্তারক্ষী আনিস জানান, মুরাদ হাসান নামে কেউ এই বাড়িতে আসেননি।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থাকাকালীন মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত সহকারী (রাজনৈতিক) জাহিদ নাইমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওনার সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়নি। তিনি কোথায় আছেন, তা জানি না।’
একের পর এক মামলার আবেদন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এক টক শোতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় রোববার মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। একই সঙ্গে অনুষ্ঠানের উপস্থাপক শেখ মহিউদ্দিন হেলালকেও আসামি করা হয়।
এর মধ্যে ঢাকা ও রাজশাহীর আদালত এ মামলা খারিজ করে দেন। আদালত থেকে বলা হয়, সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি মামলা না করে তৃতীয় কেউ মামলা করায় তা খারিজ করে দেওয়া হয়। আর সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহে আবেদনের বিষয়ে আদেশ অপেক্ষমাণ রেখেছেন আদালত।