বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের চিতলমারীতে মাছ ধরার সুবিধার্থে গাবতলা স্লুইসগেট খুলে পানি ঢোকানোর অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। স্লুইচ গেট খোলার ফলে খড়িয়া শ্রীরাম বিলের নিলয় কুমার দে নামের এক চাষির ২৫ বিঘা মাছের ঘের ও বোরো ধানের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ওই চাষির।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে চিত্রা নদীর পাড়ে পাচকুলিয়া, হরিননালা, আমতলা, খিলিগাতি, ডুমুরিয়া, বাশতলাসহ আরও অনেক স্লুইচ গেট নিয়ন্ত্রণ করেন প্রভাবশালীরা। ব্যক্তি স্বার্থের জন্য তাঁরা তাঁদের ইচ্ছামতো গেট খুলে আবার বন্ধ করে দেন। এতে মাছের ঘের এবং ধানখেতের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত গেটগুলো নিয়ন্ত্রণ করে পানির ব্যবস্থাপনা সঠিক রাখার দাবি জানান এলাকাবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, জনবল নিয়োগের মাধ্যমে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষি নিলয় কুমার দে বলেন, ‘২৫ বিঘা জমিতে ধান ও মাছ চাষ করি। ১৫–২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু করার কথা ছিল। মাছও বেশ বড় হয়েছিল, হঠাৎ গাবতলা গেটটি খুলে দেওয়ায় পানির স্রোতে ঘেরের পাড় ভেঙে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ও ধানের ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠব আর কীভাবেই বা সংসার চালাব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’
পার্শ্ববর্তী আরেক কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গেট খুলে দেওয়ায় গোনের সময় পানির চাপে আমারও ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। আমার মতো অনেক কৃষক-ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিন্তু আমাদের দুঃখ দেখার কেউ নেই, আর ভয়ে আমাদের প্রতিবাদেরও সাহস নেই। সরকার যদি অন্তত গেটগুলো যথাযথ ব্যবস্থাপনায় রাখে তাহলে আমাদের মতো কৃষকেরা বাঁচতে পারেন।’
চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নিজাম উদ্দীন শেখ বলেন, ‘স্লুইচ গেটগুলো পাউবোর। তাঁরা যদি আমাদের লিখিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয় তাহলে আমরা যথাযথভাবে এর দেখভাল করব।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থের জন্য এক শ্রেণির অসাধু লোক গেটগুলোকে খুলে দেন। এতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের লোকবলের অভাব রয়েছে, তবে লোকবল নিয়োগ দেওয়া হলে এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’