নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রায় সব টুর্নামেন্টেই কমবেশি সাফল্যের হাসি হাসছেন বাংলাদেশের তিরন্দাজরা। আর শিষ্যদের খুশিতে বাংলাদেশ জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিখের মুখের হাসির পরিধি বাড়ছে দিনে দিনে।
সর্বশেষ থাইল্যান্ডের ফুকেটে সদ্য শেষ হওয়া এশিয়া কাপ আর্চারিতে যেখানে একটা সোনা হলেও সন্তুষ্ট থাকতেন মার্টিন ফ্রেডরিখ ও তিরন্দাজরা, সেখানে তিন সোনাসহ চার পদক জয় এক চমক হয়ে এসেছেই বলে জানালেন মার্টিন। আজকের পত্রিকাকে জামার্ন কোচ বললেন, ‘পদকের সংখ্যাই সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে দেয়। যদি সোনা জেতেন তাহলে ওপরের সারিতেই থাকবেন। আমরা তিন সোনা আর এক রুপা জিতলাম। আমার ও দেশের সবার জন্য এ এক গর্বের মুহূর্ত।’
অথচ গত মাসে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে ভীষণ ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলেন মার্টিন। তিরন্দাজদের অনুশীলনের মাঠ টঙ্গীর শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়াম একপ্রকার দখলই করে নিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বাফুফের এমন কাণ্ডে যে ক্ষোভ এখনো যায়নি মার্টিনের, সেটা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট, ‘আমাদের জন্য এটা এক ইতিহাস। আর ফুটবলের একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। গত মাসে আগে যা হয়েছে, সেটা নিয়ে মোটেও খুশি হওয়ার কিছু ছিল না। ফুটবলের কারণে আমি আমার পরিকল্পনাগুলো সাজাতে পারছিলাম না। অনুশীলনটা সঠিকভাবে হচ্ছিল না।’
তবে শেষ পর্যন্ত একটা সমাধান হওয়ায় মার্টিন সন্তুষ্ট। রোমানদের জার্মান কোচ বললেন, ‘শেষ পর্যন্ত বাফুফে তাদের মাঠ খুঁজে পেয়েছে। মাঠটা বাফুফের দখলে থাকলে এখানে পেশাদারত্ব বজায় রেখে কাজ করা কঠিন হয়ে যেত। এভাবে আসলে সম্ভবও না। আর এটা তো ফুটবলের জন্যও ভালো না। তাদের দরকার সুন্দর একটা গোছানো মাঠ। এখন সব ঠিক আছে। আমরা দ্রুত গুছিয়ে উঠেছি।’
এশিয়া কাপে সাফল্যের পর আগামী মাসে তুরস্কের আনাতোলিয়ায় বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন তিরন্দাজরা। বিশ্বকাপে নিজের লক্ষ্যের কথাও জানিয়ে রাখলেন মার্টিন। বললেন, ‘বিশ্বকাপে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার বড় বড় দেশগুলোর বিপক্ষে খেলা হবে। সেখানে আমাদের মূল লক্ষ্য হবে অন্তত একটা হলেও পদক জয়। প্রতিপক্ষরা বেশ শক্তিশালী হবে। আমাদের চেষ্টা থাকবে ১২-১৪তম স্থানে থাকা। কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলতে পারলে ভালো হয়।’
সাফল্যের পাশাপাশি কিছুটা আক্ষেপও আছে মার্টিনের। পুরুষ তিরন্দাজদের পাইপলাইন সমৃদ্ধ হলেও নারী তিরন্দাজদের সংখ্যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন তিনি। যদিও এবারের এশিয়া কাপে তিন সোনার সবগুলোতেই জড়িয়ে আছে নারী তিরন্দাজ নাসরিন আক্তারের নাম। পদকসংখ্যা বাড়াতে হলে নারীদের পাইপলাইনটাও বড় করতে হবে। জার্মান কোচ তাই বলছেন, ‘জাতীয় দলে এখনো নারী তিরন্দাজদের সংকট আছে। আর্চারি ভালোবাসে এমন খেলোয়াড় আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। যদিও যারা আছে আমি তাদের নিয়ে সন্তুষ্ট। তবু নারী আর্চার খুঁজে বের করতে হলে আমদের প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন।’