হোম > ছাপা সংস্করণ

কিছু ঘৃণ্য প্রবণতা

জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সেই হত্যাকাণ্ডকে ‘জায়েজ’ করার জন্য বেশ কিছু বয়ান তৈরি করা হয়েছিল। মুজিব পরিবারের ওপর এমন কিছু দোষ চাপানো হয়েছিল, যেগুলো করেছে অন্যরা কিংবা আদৌ সে রকম কিছু ঘটেইনি। শেখ কামালের ‘ব্যাংক ডাকাতি’র গল্পটা সে রকমই। শেখ জামালকে বিদেশে পড়াশোনা করতে পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত টাকাও ছিল না শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে, অথচ শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পদ নিয়েও অনেক রূপকথার জন্ম দেওয়া হয়, যার কোনো বাস্তব ভিত্তি ছিল না।

এমন নয় যে দেশটা চলছিল পুরোপুরি মসৃণভাবে। প্রশাসনে ব্যর্থতা ছিল, স্বজনপ্রীতি ছিল, দুর্নীতি ছিল, মজুতদারি ছিল। সেগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরেই তো বঙ্গবন্ধু ভেবেছিলেন বাকশালের কথা। বাকশালের ভালো-মন্দ নিয়ে আলাদা আলোচনা হতে পারে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা ভালো কি মন্দ, সেটাও ভিন্ন আলাপের বিষয়। কিন্তু দেশের তখনকার পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর কাছে মনে হয়েছিল, বাকশালের মাধ্যমে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে দেশে। জীবনের শেষ দিককার ভাষণগুলোতে জাতি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর যে হতাশাগুলো ফুটে উঠেছে, তার একটি আভাস কিন্তু পাওয়া যায় তাজউদ্দীন আহমদকে উদ্দেশ্য করে বঙ্গবন্ধুর একটা কথায়। মুক্তিযুদ্ধকালে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেছিলেন ফারুক আজিজ খান। তিনি তাঁর ‘বসন্ত ১৯৭১’ নামের বইয়ে লিখেছেন, ‘তাজউদ্দীন সাহেব একাধিকবার বলেছেন, “আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। এর সমস্যাও অনেক বড়।”…তিনি আমাকে এ-ও বলেছিলেন, “মুজিব ভাই আমাকে বলেছিলেন, তাজউদ্দীন, আমি এখন বাঙালিকে যতটা জানি, আগে ততটা জানলে রাজনীতিতে যোগ দিতাম কি না, জানি না।’’ বাঙালি জাতির হাবভাব মুজিব ভাই যত ভালো বুঝতেন, তা আর কেউ বোঝে না।’ (পৃষ্ঠা ১৩৪-১৩৫)

অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু এই কথাগুলো বলেছিলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে। সেই বাঙালি জাতির কিছু কুশীলব বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে জাতিকে বিভক্ত করার কাজগুলো সুসম্পন্ন করছিল।

বাংলাদেশের যে জেনারেলরা তাঁদের স্মৃতিকথা লিখেছেন, সেখানেও দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিয়ে নানা ধরনের মূল্যায়ন। তাঁদের বইপত্র পড়লে পরস্পরবিরোধী অনেক কথা চোখে পড়ে। যেমন তখনকার সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ সেদিন কেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন? তিনি কেন ফোর্স পাঠালেন না? শাফায়াত জামিলও যখন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা হয়েছে জানলেন, তখন তিনি মৌন থাকলেন কেন? এ অবস্থায় তিনি কিসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন? খালেদ মোশাররফ ও শাফায়াত জামিলের সে সময়ের আচরণ জেনারেল হামিদের কাছে দুর্বোধ্য মনে হয়েছিল। খুনিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করলে সেই ‘অভ্যুত্থান’ নিমেষেই শেষ হয়ে যেত। আর জিয়াউর রহমান? বাকশালে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁর ছুটোছুটি, সেনাপ্রধানকে সরিয়ে তাঁকে সেনাপ্রধান করার জন্য বঙ্গবন্ধুর কাছে ধরনা দেওয়া, বিরক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধুর জিয়াকে পদত্যাগ করতে বলা, সিনিয়র অফিসার হিসেবে কোনো রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কাজে অংশ না নেওয়ার কথা বললেও জুনিয়ররা এগিয়ে গেলে তিনি মৌন থাকবেন—এই কথাগুলো খুনিদের একজনকে বলা থেকেই বোঝা যায় জিয়াউর রহমানের অবস্থান। তাই মেজর ডালিমের স্ত্রীর অপমানের প্রতিশোধের গল্পের মতো কিছু গল্প বলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডকে জায়েজ করার প্রবণতা শুধু ঘৃণ্যই নয়, সত্যেরও অপলাপ। যেকোনো অরাজকতাই শাস্তিযোগ্য, কিন্তু একজনের অন্যায়কে আরেকজনের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়াও একই রকম শাস্তিযোগ্য অপরাধ—এই সত্য ভুলে যাওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলার সময়।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন