মুফতি খালিদ কাসেমি
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উৎসব কিংবা অনুষ্ঠানে সাজসজ্জার উদ্দেশ্যে মেহেদি ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। আমাদের সমাজেও বিবাহ কিংবা ঈদের সময় নারীদের সঙ্গে অনেক পুরুষকে মেহেদি ব্যবহার করতে দেখা যায়। এখানে আমরা ইসলামের আলোকে পুরুষের মেহেদি ব্যবহারের বিধান তুলে ধরার চেষ্টা করব।
ইসলামে পুরুষেরা শুধু সাজার উদ্দেশ্যে হাতে-পায়ে মেহেদি লাগালে তা জায়েজ হবে না। কারণ মেহেদি নারীদের সাজের অংশ। পুরুষের হাতে-পায়ে মেহেদি ব্যবহারে নারীদের সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। সাজসজ্জা বা পোশাকে নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। হাদিস শরিফে এ ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নারীর বেশধারী পুরুষের ওপর এবং পুরুষের বেশধারী নারীর ওপর লানত করেছেন।’ (বুখারি)
তবে পুরুষের চুল-দাড়ি পেকে গেলে তাতে মেহেদি লাগানোর অনুমতি আছে। নবী (সা.) বলেছেন, ‘যেসব জিনিস দিয়ে তোমরা বার্ধক্য পরিবর্তন করতে পারো, তার মধ্যে মেহেদি ও কাতাম (মেহেদি জাতীয় বস্তু) হলো সর্বোত্তম।’ (ইবনে মাজাহ)
এ ছাড়া চিকিৎসার প্রয়োজনেও পুরুষের জন্য মেহেদি ব্যবহার করার অনুমতি আছে। স্বয়ং নবীজি (সা.) বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে মেহেদি ব্যবহার করেছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, সালমা (রা.) নবী (সা.)-এর সেবা করতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখনই তলোয়ার বা কাঁটা ইত্যাদির কারণে আহত হয়েছেন, আমাকে তাতে মেহেদি লাগিয়ে দিতে বলতেন।’ (তিরমিজি)
অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবী (সা.)-এর সেবিকা সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, কেউ মাথাব্যথার অভিযোগ নিয়ে নবীজির কাছে এলে তিনি তাকে বলতেন, ‘শিঙা লাগাও’। আর পায়ে ব্যথার অভিযোগ করলে বলতেন, ‘মেহেদি পাতার রস লাগাও।’ (আবু দাউদ)
লেখক: শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক