হোম > ছাপা সংস্করণ

পুকুর শুকিয়ে পানির আকাল

সুমেল সারাফাত, মোংলা (বাগেরহাট)

উপকূলের লবণপানি অধ্যুষিত বাগেরহাটের মোংলা বন্দর পৌরসভা এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দীর্ঘদিনের। খাবারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পানি নিয়ে এখানকার মানুষের যেন ভোগান্তির শেষ নেই।

এ সংকট সমাধানে গত ২০০৮ ও ২০১৬ সালে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর শহরের মাছমারা এলাকায় পুকুর খননসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা ও অবকাঠামো করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানো হচ্ছিল।

কিন্তু সরবরাহ করা সেই পানি চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল হওয়া ও অনাবৃষ্টির কারণে পুকুর দুইটি শুকিয়ে যাওয়ায় নতুন করে বিপাকে পড়েছেন পৌর কর্তৃপক্ষ। এর সঙ্গে পৌর শহরের বাসিন্দাদের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে। অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এদিকে আষাঢ়ের আগমনেও কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি হচ্ছে না উপকূলীয় এই উপজেলায়।

মোংলা বন্দর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, মোংলা পৌর এলাকার দীর্ঘদিনের পানিসংকট দূর করতে ২০০৮ সালে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মাছমারা এলাকায় পুকুর খননসহ প্রয়োজনীয় স্থাপনা ও অবকাঠামো করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সুপেয় পানির চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। তাতেও চাহিদা না মেটায় পুনরায় ২০১৬ সালে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি পুকুর খননসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হয়।

মোট ৮৩ একর জমিতে দুটি পুকুর খনন, দুটি ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। এ পুকুর দুটিতে বৃষ্টি ও নদীর পানি সংরক্ষণ করে তা বিশুদ্ধ করে পৌরবাসীদের সরবরাহ করা হয়।

পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্প অনুযায়ী ১৫ ফুট গভীর না করে মাত্র ৪ ফুট গভীর করা হয়েছে। দায়সারাভাবে খননকাজ শেষ করে টাকা তুলে কেটে পড়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। আর এতে গাফিলতি রয়েছে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদেরও।

পৌর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সেলিম, ২ নম্বর ওয়ার্ডের আবু বক্কর সিদ্দিক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুম বিল্লাহ বলেন, পৌরসভার একমাত্র সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প ছাড়া শহরের অন্য কোথাও কোনো মিষ্টি পানির পুকুর কিংবা বিকল্প উৎস নেই। পৌর কর্তৃপক্ষের একমাত্র সুপেয় পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে পানি দেওয়া হলেও তা ঠিকমতো পান না। যতটুকু পান তাতে চাহিদা মেটে না। তার মধ্যে আবার পুকুরও শুকিয়ে গেছে, এখন তো আরও খারাপ অবস্থা।

মোংলা বন্দর পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহিদ বলেন, পৌরসভার প্রায় দুই লাখ মানুষের প্রতিদিন ৬০ লাখ লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ৩০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। আর পুকুরের গভীরতা কম থাকায় ৩০ লাখ লিটার পানির ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। আর এখন তো পুকুর শুকিয়ে গেছে, নদীর লবণ পানি তাও পুকুরে ঢোকানো যাচ্ছে না। এখন একমাত্র ভরসা বৃষ্টি। বৃষ্টি হলে পানি বাড়বে। তা না হলে কোনো উপায় থাকবে না।

সুপেয় পানির সংকটের কারণে পৌরবাসীর ভোগান্তির কথা স্বীকার করে পৌর মেয়র শেখ আব্দুর রহমান বলেন, বিগত সময়ে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর দুটি খননের কারণে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। পুকুর দুটি শুকিয়ে যাওয়ায় পৌরসভার বাসিন্দাদের চরম দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়েছে। বিগত সময়ে পুকুর খননে যাঁরা অনিয়ম করেছেন, তাঁরা পুরো কাজ সম্পন্ন না করে জামানত ও বিল নিয়ে গেছেন। তাঁদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্টদের অনিয়মের কারণেই এখন এই পানিসংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের এটি দেখভালের দায়িত্ব থাকলেও তাঁরা এদিকে ফিরেও তাকান না। এ জন্য ভোগান্তি আরও বেড়েছে।

মেয়র বলেন, পৌরসভার বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাঘবে প্রায় ২৯ কোটি টাকার বর্ধিত একটি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেটির অনুমোদন পেলেই এ সংকট নিরসন করে পৌরবাসীকে চাহিদা অনুযায়ী সুপেয় পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। তবে এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সোহান আহম্মেদ বলেন, পানির প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের পর তাঁদের আর কোনো দায়িত্ব থাকে না। তারপরও পানির সমস্যার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন