গাংনী ও নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি
‘আমাদের মতো গরিবের আবার কিসের শীত, না খাটলে পেট চলে না। যতই ঠান্ডা পড়ুক, পেটের তাগিদে আমাদের বের হতেই হবে। কাজ করলে মুখে ভাত উঠবে, না হলে উপোস থাকতে হবে। ভ্যান চালিয়ে আয় হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। শীতে মানুষ তেমন বের হতে পারছে না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, সংসার খরচ, ওষুধের দাম—সব মিলিয়ে ভালো নেই।’ এভাবেই নিজেদের দুরবস্থার কথা বলছিলেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভ্যানচালক আমিনুল ইসলাম।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তীব্র শীতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। মানুষ বাইরে কম বের হওয়ায় আয় কমে গেছে অটো ও ভ্যানচালকদের। ভ্যানচালক ইয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘শীত দেখে তো আর পেট চলে না বাপ, খাটতে পারলেই পেট চলে। শীতের কষ্ট ভুলে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বের হয়েছি। আল্লাহ শীত দিয়েছে, আল্লাহ কমিয়ে দেবে।’
নালিতাবাড়ী: শেরপুরের গারো পাহাড়ের সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকছে চারপাশ। এতে কাবু হয়ে পড়েছে সীমান্তঘেঁষা ১৫ গ্রামের মানুষ। জনপ্রতিনিধি ও সীমান্তবর্তী গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পোড়াগাঁও, নয়াবিল ও রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নে প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী আন্দারুপাড়া, পূর্ব শমশ্চুড়া, পশ্চিম শমশ্চুড়া, বাতকুচি, খলচন্দা ও বুরুঙ্গা, কাটাবাড়ি, দাওধারা, নাকুগাঁও, ডালকোনা, তারানি, পানিহাটা, মায়াঘাঁষী, ফেকামারী ও গোপালপুর গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ কষ্টে দিন পার করছে।
বাতকুচি গ্রামের রফিকুল ইসলাম (৪২) বলেন, ‘চার দিন ধরে তেমন সূর্যের দেহা নাই। অহন বীজতলা লইয়া দুশ্চিন্তায় আছি। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে গ্রামবাসীর ঘর থাইকা বাহির অইতে কষ্ট অয়। পাহাড়ি বাতাস আর লগে ঠান্ডায় হাত-পা পাত্তর হইয়া আহে।’
জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, ‘জেলাজুড়ে ৩১ হাজার ৬৫০টি কম্বল দিয়েছি। সরকারের কাছে আমরা আরও চেয়েছি।’