নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
২০১৫ সালে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে বসেছিল আর্টিফিশিয়াল বা অ্যাস্ট্রো টার্ফ। এই সাত বছরে এই মাঠকে ঘিরে বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ ছিলই। খেলতে নামলে খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার শঙ্কা আছে জেনেও শুধু লিগের খেলা বাদে সব খেলাই হয়েছে এই মাঠে। কমলাপুরের মাঠ নিয়ে এর আগে যত অভিযোগ—পাত্তায় দেয়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। অভিযোগ জমতে জমতে এই ফেডারেশন কাপে তা মহাবিস্ফোরণই ঘটেছে।
শীর্ষ পর্যায়ে বাফুফের যত ম্যাচ আয়োজন, সব ঢাকাকে কেন্দ্র করেই। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এত দিন ছিল বড় ভরসা। ঢাকার বাইরে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম ও কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের মাঠ মানসম্মত হওয়ার পরও এসব মাঠে লিগ আয়োজনে যথেষ্ট অনীহা আছে বাফুফের। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় ফেডারেশনের সব নজর এখন কমলাপুরের স্টেডিয়ামকে ঘিরে। দিনে দুই ম্যাচের বেশি হওয়ার কথা না থাকলেও অতিমাত্রায় ব্যবহারে ধুঁকছে কমলাপুরের টার্ফ।
স্বাধীনতা কাপের খেলা হয়েছে কমলাপুর স্টেডিয়ামের অ্যাস্ট্রো টার্ফে। ফেডারেশন কাপেরও ভেন্যু এই মাঠ। অনেকটা অনিচ্ছা নিয়ে স্বাধীনতা কাপে খেললেও খেলোয়াড়দের চোটে পড়ার মিছিল দেখে এই মাঠে ফেডারেশন কাপ খেলতে আপত্তি জানিয়েছে তিন দল। প্রথম ম্যাচ না খেলেই কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে ছয় দল। গতকাল সাইফ স্পোর্টিং-পুলিশ এফসির ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।
কমলাপুরের অ্যাস্ট্রো টার্ফের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আর এই টার্ফ কতটা খেলোয়াড়বান্ধব সেই প্রশ্নকে সামনে এনে ফেডারেশন কাপকে আলোচনার কেন্দ্রে রেখেছে লিগ ও এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। একাধিক খেলোয়াড়ের চোট তো আছেই, আছে কোয়ার্টার ফাইনালে সূচি পাল্টানোর অভিযোগ। তবে বসুন্ধরার সভাপতি ইমরুল হাসান এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে বলেছেন, ফেডারেশনের প্রতি তাদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ! বাফুফে বিভিন্ন সময় নিয়ম পরিবর্তন করে একটি ‘বিশেষ’ ক্লাবকে সুবিধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ ইমরুলের। বসুন্ধরার এক কর্মকর্তা জানালেন, বিভিন্ন সময় বাফুফের একাধিক ভুল নিয়ে ভেতরে ক্ষোভ জমেছে বসুন্ধরার।
তবু বাফুফে চাইলে কমলাপুর থেকে খেলা সরিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম অথবা গাজীপুরে টুর্নামেন্ট আয়োজন করলেও হয়তো এমন বিতর্কের তৈরি হতো না, এমনটাই বলছেন উত্তর বারিধারার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ‘স্বাধীনতা কাপের পর বাফুফের উচিত ছিল ক্লাবগুলোর সঙ্গে বসে তাদের কথা শোনা, কিন্তু তারা শোনেনি। হঠাৎ দাওয়াত দিয়ে বলল, ফেডারেশন কাপের ড্র, আপনারা আসেন। আগে মিটিং ডাকলে ১২টা ক্লাব যেত, ভোটাভুটি করে সিদ্ধান্ত নিতে পারত বাফুফে, কিন্তু তারা সেটা করেনি।’