ক্রীড়া ডেস্ক
কাতারে গত ২০ নভেম্বর শুরু হওয়া বিশ্বকাপ চলে এসেছে প্রায় শেষদিকে। বাকি শিরোপার নিষ্পত্তি আর একটা ‘সান্ত্বনার ম্যাচ’। সান্ত্বনার ম্যাচের পোশাকি নাম তৃতীয় স্থান নির্ধারণী।
এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় চমক উপহার দিয়েছে মরক্কো। ইতিহাসে প্রথম কোনো আফ্রিকান-আরব দল হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে তারা যখন শিরোপার দিকে পাখির চোখ করে রেখেছিল, তখনই ছিটকে যেতে হলো ফ্রান্সের কাছে হেরে। ক্রোয়েশিয়ানরা অবশ্য এখানে কিছুটা এগিয়ে ছিল। রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার্সআপ দলটির জন্য সেমিফাইনাল তো নতুন কিছু নয়। তাদেরও হয়েছে মরক্কোর মতোই পরিণতি। উদ্দিষ্ট লক্ষ্যের খুব কাছে গিয়েও ব্যর্থ হওয়ার যাতনা ও বিষাদের গল্প দুই দলের।
বিশ্বকাপের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচের আবহ ঠিক এমনই হয়। যে ম্যাচ খেলতে চায় না কোনো দলই। তবু খেলতে হয়। এমনই ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নামবে ক্রোয়েশিয়া ও মরক্কো।
মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই মনে করেন, ম্যাচটি যাতনার। ফুটবল বিশ্বকে চমকে দেওয়া মরক্কো কোচ বলেন, ‘আমি মনে করে এটি আমাদের খেলতে যাওয়া ম্যাচগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বাজে ম্যাচ।’ যতই হতাশা থাকুক, একেবারে শূন্য হাতে ফিরতে চাইছেন না মরক্কোর সাফল্যের এই কারিগর। বললেন, ‘হতাশা অতিক্রম করে সেরা একটি ম্যাচ খেলব ভেবে আমরা উচ্ছ্বসিত।’ তবে ফাইনাল মিস করার হতাশাও লুকাতে চাইছেন না ওয়ালিদ। বললেন, ‘নিশ্চিতভাবেই আমরা আসল ফাইনাল খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন এটাই আমাদের ফাইনাল, যা জয় করে পুরস্কার মঞ্চে যেতে সহায়তা করবে।’
তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ এমনই এক প্রতিযোগিতায় ফেলে দেয়, যেন ক্লান্তি ও হতাশা একই সঙ্গে ঘিরে ধরে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সেই পরীক্ষায় সবার আগে উতরাতে হবে হাকিমি-জিয়েশদের। ম্যাচের আগে অবশ্য খেলোয়াড়দের ক্লান্তি ও মানসিক শক্তির পরীক্ষায় উতরাতে হবে। তবে তা সহজ নয় বলেও মানেন মরক্কোর কোচ, ‘টানা ম্যাচ খেলার ক্লান্তি তো রয়েছেই, কিন্তু সবচেয়ে বড় বাধাটা হচ্ছে মনস্তাত্ত্বিক। আমরা জানি ক্রোয়েশিয়াও তৃতীয় হওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা তাদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলেছি। এটা পার্কে হাঁটাহাঁটি করার মতো স্বাভাবিক কোনো ম্যাচ হবে না।’
দুই দলই নিজেদের সেরা একাদশ পাচ্ছে এই ম্যাচে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে চোটে পড়া মার্সেলো ব্রজভিচ ফিট হয়ে দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। আক্রমণ ভাগে ফিরতে পারেন আন্দ্রেই ক্রামারিচ। অন্যদিকে সেমির দলের সঙ্গে কোনো পার্থক্য হওয়ার কথা নয় মরক্কোর দলেও।
ম্যাচের আগে যতই সেমিতে হেরে যাওয়ার ক্লান্তি-বিষাদ থাক, মর্যাদার একটা লড়াই তবু হবে এ ম্যাচে। সে লড়াইয়ে হারতে চাইবে না কোনো দলই। আর তাতেই দেখা যেতে পারে ফাইনালের আগের দিন রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ।