মধুখালী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের মধুখালীতে ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি খুচরা বিক্রেতাদের।
খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ, অর্ডার দিয়েও চাহিদামতো তেলের সরবরাহ পাচ্ছেন না তাঁরা। আবার কোনো কোনো ব্র্যান্ডের তেলের নতুন অর্ডার নেওয়া হচ্ছে না। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলে ইতিমধ্যে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায়, এক লিটারের তেল ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।
গতকাল মধুখালী বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ দোকানেই পর্যাপ্ত সয়াবিন তেল নেই। এক লিটার ও দুই লিটারের বোতল কিছু থাকলেও পাঁচ লিটারের কোনো সয়াবিন তেলের বোতল সরবরাহ করা হচ্ছে না। বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো চাহিদামতো সরবরাহ না করায় সয়াবিন তেলের এই সংকট তৈরি হয়েছে বলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছেন।
মধুখালী বাজারের মোল্লা স্টোরের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ ধরে তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদামতো তেল দিচ্ছে না, তেলের সরবরাহ বন্ধ আছে। কয়েকটি ব্র্যান্ডের ডিস্ট্রিবিউটররা তাঁদের অন্য পণ্যের অর্ডার নিলেও সয়াবিন তেলের অর্ডার নিচ্ছেন না।
সংকটের কারণে জানতে চাইলে একাধিক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ী চক্র কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বেশি বেশি তেল নিয়ে বাড়তি দামের আশায় মজুত করছে।
কয়েকজন ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোম্পানি থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ঈদের আগে সরবরাহ চালু হবে কিনা তাও বলা যাচ্ছে না। খোলা তেলই এখন ক্রেতাদের ভরসা।
বাজারে তেল ক্রয় কিনতে আসা মো. বিপ্লব জানান, বাজার ঘুরে ১ লিটার তেলের বোতল খুঁজে পাইনি।’
আরও অনেক ক্রেতা জানান, ‘বাজারে এক লিটার ও দুই লিটারের তেলের বোতল পাওয়াই যাচ্ছে না। ৫ লিটার তো আগেই উধাও। যা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম লিটারপ্রতি ১০ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে প্রশাসন ও ক্যাবের কোনো নজরদারি নেই।
মধুখালী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল বাসার বাদশা বলেন, ‘বাজারে ভোজ্যতেল নেই বললেই চলে। ক্রেতাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে অনেকেই খোলা সয়াবিন ও সরিষা তেল ব্যবহার করছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ বলেন, ‘বাজারে ভোজ্য তেলের সংকট থাকার কথা না। এরপরও যদি বেশি দামে তেল বিক্রির অভিযোগ ওঠে তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মো. সোহেল শেখ আরও জানান, ‘বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।