হোম > ছাপা সংস্করণ

ক্যানসার জয়ে সাইক্লিং

বেলাল হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

লাদাখের খারদুংলা পাস বিশ্বের যেকোনো সাইকেল বা মোটরসাইকেল চালকের জন্য বিপজ্জনক সড়ক। সে সড়কে সাইকেল চালাচ্ছেন তোজাম্মেল হোসেন মিলন। ভারতের ১৬টি প্রদেশে ঘুরেছেন সাইকেলে। দার্জিলিংয়ে তেনজিং নরগে এমটিভি চ্যালেঞ্জ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু ট্যুর দি সিএইচটিসহ অনেক রেস সফলভাবে সম্পন্ন করার রেকর্ড আছে তাঁর।

একাধিকবার ১০০ ও ৫০ কিলোমিটার আলট্রা ম্যারাথন এবং ৩০টি হাফ ম্যারাথনে সফল হওয়ার গল্পও আছে তাঁর ঝুলিতে। আছে দেশে সাইকেল চালিয়ে ৪৫টি জেলা ঘোরার সফলতা।

একজন সাইক্লিস্টের কাছে এ রেকর্ডগুলো স্বপ্নের মতো। কিন্তু মিলনের কাছে প্রতিটি সফলতা তিলে তিলে জীবন বাঁচিয়ে তোলার যুদ্ধ!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক ছাত্র তোজাম্মেল হোসেন মিলন। ২০১৬ সালে তাঁর শরীরে টিউমার শনাক্ত হয়। সে সময় মিলনকে ক্যানসারের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেন চিকিৎসক। পরামর্শ দেন, প্রচুর ঘাম ঝরাতে হবে যাতে শরীরের লিম্ফোমাগুলো দূর হয়। অদম্য মিলন বেছে নেন সাইক্লিং। এরপর জাহাঙ্গীরনগরের সরু রাস্তা থেকে পর্যায়ক্রমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়  অংশগ্রহণ। সে সূত্রে গত ৩০ অক্টোবর মালয়েশিয়ার পুত্রজায়াতে অনুষ্ঠিত পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ সফলভাবে শেষ করতে সক্ষম হয়েছেন মিলন।

পাওয়ারম্যান মালয়েশিয়া হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ডুয়াথলন রেস। প্রতিবছর এশিয়া ট্রায়াথলন অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় পাওয়ারম্যান ওয়ার্ল্ড সিরিজের এ অংশ। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৪০টি দেশের ৪ হাজার ৪৩১ জন প্রতিযোগী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেন। সর্বশেষ আসরে মিলন ক্ল্যাসিক ক্যাটাগরিতে ১০ কিলোমিটার দৌড়, ৬০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং পুনরায় ১০ কিলোমিটার দৌড় শেষ করেন ৪ ঘণ্টা ২৩ মিনিট সময়ের মধ্যে। ৩০ থেকে ৩৪ বছরের বয়সভিত্তিক ক্যাটাগরিতে মিলন ৪৬তম এবং পুরো প্রতিযোগিতায় সেরা ৩০০ জনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন।

মিলন বর্তমানে রাজধানীর একটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একদিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৌতূহলবশত সাইকেল নিয়ে রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশে। সেদিন তাঁর মাথায় সাইকেলে দুনিয়া দেখার স্বপ্ন তৈরি হয়। এরপর যুক্ত হন গাজীপুর সাইকেল রাইডার্স ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাবের সঙ্গে।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে মিলনের যাত্রাপথ সহজ ছিল না। ২০২০ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত আয়োজনটি করোনার প্রকোপে বাতিল হয়ে যায়। আবার দিনক্ষণ ঠিক হলে মিলনকে ধারদেনা করে প্রস্তুতি নিতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জুনিয়রদের কাছ থেকে সাইকেল এবং জুতো ধার নিয়ে এক মাসের ট্রেনিং করেন মিলন। তিনি এই ধার করা সাইকেল ও জুতা দিয়েই ইভেন্ট সম্পন্ন করেন।

দেশের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী সাইক্লিংকে পেশা হিসেবে নেওয়া সম্ভব না হলেও সুযোগ পেলে বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ডুয়াথলন ইভেন্টে অংশ নিতে চান মিলন। বিশেষ করে পাওয়ারম্যান ওয়ার্ল্ড সিরিজ শেষ করতে এবং মাউন্টেইন সাইক্লিং রেসে অংশ নিতে চান তিনি। এ ছাড়া সাইকেল চালিয়ে পুরো পৃথিবী ভ্রমণের স্বপ্ন তো আছেই।

ক্যানসার, মৃত্যুভয় সবকিছু যেন একেবারে জয় করে ফেলেছেন তোজাম্মেল হোসেন মিলন।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন