হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
ডিজেল নিয়ে আসা একটি জাহাজের ধাক্কায় মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ডলফিন-৫ জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর। এর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ওই জেটিটি মেরামত করেনি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এতে আমদানি করা তেল খালাস নিয়ে বিপাকে পড়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রথম দিকে বন্দরের ডলফিন-৪ জেটি ব্যবহার করলেও এখন জোড়াতালি দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওই জেটিতেই তেল খালাস করছে প্রতিষ্ঠানটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেঘনা পেট্রোলিয়ামের এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডলফিন-৫ জেটি মেরামত না করায় খুব কষ্ট করে তাঁদের তেল খালাস করতে হচ্ছে। দ্রুত এই জেটি মেরামত না করা হলে ভবিষ্যতে বিড়ম্বনা আরও বাড়বে।
পুরোনো জেটি ভেঙে ২০০৫ সালে নিজস্ব অর্থায়নে দুটি ডলফিন জেটি নির্মাণ করে বিপিসি। এর মধ্যে ডলফিন-৬ জেটিতে পদ্মা অয়েল তেল খালাস করে। ডলফিন-৫ নামে অন্য জেটি দিয়ে তেল খালাস করে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। এর মধ্যে মেরামত জটিলতায় গত ছয় মাস ধরে ডলফিন-৬ জেটিতে তেল খালাস বন্ধ আছে।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমদানি করা ডিজেল খালাসের জন্য আসা এমটি গ্র্যান্ড এইচ-৮ জাহাজের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ডলফিন-৫ জেটি। এ সময় জেটির অভ্যন্তরীণ লাইনগুলো দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে জেটি থেকে ৪ নম্বর লাইনটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যে কারণে জেটিটিতে বিদেশি জাহাজ বার্থিং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফলে আমদানি করা পরিশোধিত জ্বালানি তেলের জাহাজ হ্যান্ডেলিংয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এসব তেল খালাসে বন্দরের ওপর নির্ভরশীল হতে হয় বাংলাদেশে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি)। তবে এই জটিলতা সাময়িকভাবে লাঘব করা। মেঘনা পেট্রোলিয়ামের উদ্যোগে কিছু মেরামত করে ডলফিন-৫ জেটিতেই ট্যাংকার থেকে তেল খালাস করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মীর ছাইফুল্লাহ আল খালেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো সম্পূর্ণ মেরামত হয়নি। আমরা নিজ উদ্যোগে কিছু মেরামত করে এখন তেল খালাস করছি। একটু অসুবিধে হচ্ছে। তবে তেল খালাস নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হচ্ছে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মীর ছাইফুল্লাহ আল খালেদ বলেন, ‘কবে নাগাদ মেরামত করা হবে এটি বিপিসি বলতে পারবে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর একটি কমিটি করা হয়েছিল। আমরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে তাঁদের জানিয়েছি।’
যে জাহাজের কারণে জেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৮ কোটি টাকার একটি ব্যাংক গ্যারান্টিও নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরপরও কেন এটি মেরামত করা হচ্ছে না, সেটির বিষয়ে বিপিসির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি গত দুই দিন আগে যোগ দিয়েছি। এ বিষয়ে এখনো অবগত হইনি। বিস্তারিত জেনে পরবর্তীতে এ বিষয়ে বলতে পারব।’