হোম > ছাপা সংস্করণ

ঢাকায় প্রথম যৌথবাহিনীর কামানের গর্জন

জাহীদ রেজা নূর

এদিন মুক্ত হয় মাদারীপুর শহর। প্রচণ্ড যুদ্ধের পর মুক্তিবাহিনী মাদারীপুর শহর দখল করে নেয়। তখন পাকিস্তানি সৈন্যরা পালাচ্ছিল। ওরা যেন পালাতে না-পারে, সেটা নিশ্চিত করতে মাদারীপুরের মুক্তিযোদ্ধারা রাজৈরের কাছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সমাদ্দার ব্রিজের কাছে সমবেত হন। তিন দিন প্রচণ্ড যুদ্ধের পর হানাদাররা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

এদিন ঢাকার ওপর ভারতীয় বিমানবাহিনীর কোনো বিমান আক্রমণ ছিল না। তিনটি বিমানে করে বিদেশিরা ঢাকা থেকে কলকাতায় যেতে সমর্থ হন। সেদিনই প্রথম ঢাকায় যৌথবাহিনীর ­কামানের গর্জন শোনা যায়।

এদিকে আন্তর্জাতিক মহলে চলছিল আরেক নাটক। মার্কিন প্রশাসন সোভিয়েতকে হুঁশিয়ার করে বলেছিল, যদি তারা ভারতকে যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই প্রয়োজনীয় সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানকে জানিয়ে দিয়েছিল, এবার এই যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে যাচ্ছে তারা। এই সংবাদ পেয়ে জেনারেল গুল হাসান টেলিফোনে পশতু ভাষায় নিয়াজীকে জানিয়ে দেন, ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে পাকিস্তান বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিক দিয়ে বন্ধুরা এসে পড়বে। হতোদ্যম নিয়াজী যেন প্রাণ ফিরে পান। দক্ষিণ দিক দিয়ে সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে আসবে। এদিন রাতে প্রাদেশিক সরকারের বেসামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী আলবদর ও আলশামসের কেন্দ্রীয় অধিনায়কদের ডেকে পাঠান সদর দপ্তরে। এই রাতে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে আলবদর বাহিনী সাংবাদিক নিজামউদ্দিন আহমেদকে তাঁর বাসভবন থেকে অপহরণ করে।

এদিন নীলফামারী, গাইবান্ধা, সরিষাবাড়ী, ভেড়ামারা, শ্রীপুর হানাদারমুক্ত হয়। সপ্তম নৌবহর যদি চলে আসে, তবে তার চলাচল বিঘ্নিত করার জন্য উপকূলীয় এলাকার ছোট-বড় নানা ধরনের জাহাজ এবং নৌযান ধ্বংস করে ফেলে ভারতীয় নৌবাহিনী। উপকূলীয় অবকাঠামো এবং কক্সবাজার বিমানবন্দর অকেজো করে ফেলা হয়।

পাকিস্তানের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী নূরুল আমিন কঠোর ভাষায় ভারতকে হুঁশিয়ার করে পাকিস্তান থেকে চলে যেতে বলেন। এদিন মওলানা ভাসানী এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দেওয়ার জন্য ভারত সরকার ও সে দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান।

মার্কিন হামলা কিংবা চীনের হস্তক্ষেপের হুমকি মোকাবিলায় দিল্লিতে সোভিয়েত কূটনীতিক কুজনিৎসোভ এবং মস্কোয় ভারতীয় কূটনীতিক ডি পি ধরের মধ্যে আলোচনা হয়। এদিন দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বিশেষভাবে আয়োজিত এক জনসভায় সামনে ‘অন্ধকার দিন’ ও ‘দীর্ঘতর যুদ্ধের সম্ভাবনা’ সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে দেন। মার্কিন চরমপত্র প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্টকে এক বার্তায় ইন্দিরা গান্ধী জানান, ভারত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং ভারতীয় সৈন্য দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রস্তুত আছে, তবে সেটা হতে পারবে শুধু পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করলে এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ মীমাংসায় পৌঁছতে সম্মত হলে।

সূত্র: ১২ ডিসেম্বরের আনন্দবাজার পত্রিকা। হাসান ফেরদৌস, মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত বন্ধুরা।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন