দেবিদ্বার প্রতিনিধি
দেবিদ্বারের মোহনপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা গ্রামে ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে গেছেন। এতে অনেকটাই পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি। পাল্টা হামলা এবং গ্রেপ্তারের ভয়ে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার গ্রামটিতে ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পরাজিত ও বিজয়ী সদস্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এদিকে সহিংসতার ঘটনায় পরাজিত ইউপি সদস্য প্রার্থী ফখরুল ইসলাম গত বুধবার দুপুরে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করে দেবিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াদ্দা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো গ্রাম সুনসান। আতঙ্কে থাকা অভিভাবকেরা শিশু ও স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের পাশের গ্রামের আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে বেশ কয়েকজন নারী এগিয়ে আসেন। তাঁদের প্রত্যেকের চেহারায় ছিল আতঙ্কের ছাপ।
এঁদের মধ্যে ৫০ বছরের ছাফিয়া খাতুনের হাতে আহতের চিহ্ন দেখা গেছে। তিনি জানান, হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই পিটিয়েছে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে। রাস্তার ধারের দোকান ভাঙচুর করে লুটপাত করেছে। ছাফিয়া বলেন, ‘আমাদের শিশুদের আত্মীয়স্বজনদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। এ গ্রামে কোনো পুরুষ নেই। সবাই মার খেয়ে পলাতক রয়েছে।’
নোয়াদ্দা গ্রামের আশি বছরের বৃদ্ধ মো. কালু মিয়া বলেন, ‘প্রতিপক্ষের হামলা ও পুলিশের ভয়ে আছে এ গ্রামে পুরুষেরা। সবাই পলাতক রয়েছে। নির্বাচিত ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলীও ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’
হামলায় আহত ইউনুছ মিয়ার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী। তিন দফায় আমাদের বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে।’ এই নারী বিজয়ী ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থক জানিয়ে অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা হেরে গিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে উল্টো থানায় আমাদের নামে মামলা দায়ের করেছে। আমি বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো আমাদের মামলা রেকর্ড করেনি পুলিশ। উল্টো লিখিত অভিযোগের এক নম্বর আসামি মো. আনোয়ার হোসেনের নাম কেটে দিতে আমার ওপর চাপ দিয়েছে পুলিশ।’
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (দেবিদ্বার-ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেল) মো. আমিরুল্লাহ বলেন, ‘মারামারি বা হামলার ঘটনায় দুই পক্ষই মামলা করতে পারেন। তবে থানায় মামলা এক পক্ষের নিচ্ছে না এটা তো আমার জানা নেই। মামলা না নেওয়ার কোনো প্রশ্ন আসে না। আপনি বাদীকে এখনই পাঠান। আমি মামলা নেওয়ার ব্যবস্থা করব।’