গাজীপুর প্রতিনিধি
বেকার ও অসহায় জীবন যাপন পার করছেন একসময়ের সুপরিচিত দৌড়বিদ মো. শাহ আলম। পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। তাঁর এ কষ্ট লাঘবে গত রোববার একটি অটোরিকশা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক এস. এম তরিকুল ইসলাম। এতে সুন্দরভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বাঁচার নতুন আশা করছেন শাহ আলম।
জানা যায়, শাহ আলম অনেক জাতীয় ও আঞ্চলিক পুরস্কার জিতেছেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তিনি আজ খুবই অসহায়। জাতীয় ও আঞ্চলিকভাবে তিনি পুরস্কার ও সনদ মিলিয়ে ৪৫টি সাফল্যের স্মৃতি তাকে এখন পীড়া দেয়।
শাহ আলম গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর বাজার এলাকার পূর্ব গ্রামের মো. মোতালেব হোসেনের ছেলে। ২০০০ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া সমিতি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ২০০ মিটার দৌড়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলেন। ২০০২ সালে একই প্রতিযোগিতায় ৪০০ মিটার দৌড়ে যশোরে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন উপঅঞ্চলের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করে অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তাঁর বয়স বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক সক্ষমতা না থাকায় তিনি এখন বেকার ও অসহায় জীবন যাপন করছেন। আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে তিনি অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। এ জন্য জেলা প্রশাসকের দানশীলতার কথা মানুষের কাছে শুনে তিনি খেলোয়াড় হিসেবে জেলা প্রশাসকের নিকট আর্থিক সহায়তার আবেদন করেন। পরে জেলা প্রশাসক ব্যক্তিগতভাবে শাহ আলমের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর সব কথা শুনে তাকে একটি অটোরিকশা কিনে দেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আর্থিক সহায়তা দিলে কিছুদিন চলতে পারবে কিন্তু এই টাকা শেষ হয়ে গেলে আবার আর্থিক সংকটে পড়বে। এ কথা বিবেচনা করে আর্থিক সহায়তার পরিবর্তে তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য একটি অটোরিকশা কিনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। শাহ আলম চাইলে এই অটোরিকশা নিজের চালিয়ে সুন্দরভাবে তাঁর পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করতে পারবেন।’
অটোরিকশা পাওয়ার পর শাহ আলম বলেন, ‘আমি এত পুরস্কার অর্জনের পরেও সরকারের পক্ষ থেকে আমার জন্য কিছু করা হয়নি-এটা আমার দুঃখ। আমার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের হয়ে অলিম্পিক দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিব। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমার সে স্বপ্ন পূরণ হলো না।’ তিনি আরও বলেন, ‘করোনাকালে অনেক কষ্টে আমার দিন কেটেছিল। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসকের এই উপহার আমাকে নতুন জীবনের সন্ধান দিয়েছে।’