প্রশ্ন: প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন, ফেরাটা দারুণ হয়েছে। কিন্তু সেঞ্চুরিটা মাঠে রেখে এলেন কেন?
মাহমুদুল হাসান জয়: হ্যাঁ, অবশ্যই এটা নিয়ে একটু আক্ষেপও ছিল। একজন ব্যাটার যখন সেট (থিতু) হয়, সে জানে সেট হওয়া কতটা কঠিন। আমি একটু অফসেট (নড়বড়ে) ছিলাম, আর আউট হয়ে গেলাম। ইনিংসটা আর বড় করতে পারিনি। কিন্তু আমি খুশি, আমরা ভালো জয় পেয়েছি। দল রেকর্ড রানে জিতেছে।
প্রশ্ন: টেস্টে প্রথমবার জাকির হোসেনের সঙ্গে ওপেনিং জুটি কেমন উপভোগ করেছেন? আর আপনাদের দিয়ে টেস্টে বাংলাদেশের নতুন ওপেনিং জুটির যাত্রা শুরু কি না?
জয়: খুব ভালো উপভোগ করেছি…।
প্রশ্ন: বাদ পড়ার পর গত এক বছরে নিজের কোথায় কোথায় পরিবর্তন এনেছেন, যেটি দিয়ে রানে ফিরেছেন?
জয়: পরিবর্তন এনেছি অবশ্যই। মাঝে আমাদের ‘এ’ দলের কোচ জেমি সিডন্সের সঙ্গে কিছুদিন ভালোভাবে কাজ করেছি, পরিশ্রম করেছি। তারপর ‘এ’ দলের সিরিজের সময় (উইন্ডিজের বিপক্ষে) ওর সঙ্গে ব্যাক লিফট নিয়েও কাজ করি। ব্যাক লিফট নিয়ে একটু সমস্যা দেখছিলাম। এটাতেই আসলে মূলত উপকৃত হয়েছি। আমি অনুভব করি, এটাই আমার জন্য বেশি ভালো হয়েছে।
প্রশ্ন: গত দুই বছরে বাংলাদেশ টেস্ট দলে আসলে কোথায় বেশি পরিবর্তন এসেছে?
জয়: আমাদের দল দিন দিন উন্নতি করছে। জয়ের যে ক্ষুধা, সবার মধ্যে এই স্বভাবটা আছে। জিততে চায়। এখন সবাই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ভালো উন্নতি করছি। যার যার অবস্থান থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। আশা করি সামনে আরও ভালো হবে। এখন আমাদের দলের সবাই সবাইকে অনেক সহায়তা করে, সবাই হেল্পফুল।
প্রশ্ন: কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে আপনার টেম্পারামেন্ট নিয়ে প্রশংসা করেছেন। আফগানিস্তান টেস্টের আগে বা মাঝে আপনার প্রতি তাঁর কী বার্তা ছিল?
জয়: ওয়েস্ট ইন্ডিজের ‘এ’ দলের বিপক্ষে আমার যে ইনিংসটা ছিল, ওটা দেখেছেন কোচ। বলেছেন, এখন তুমি অনেক ভালো শেপে (অবস্থায়) আছ, আত্মবিশ্বাস ভালো আছে, (সিরিজের আগে) সর্বশেষ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছ। সুতরাং তুমি এটা ধরে রাখার চেষ্টা করবে। আমি তোমাকে এখন কিছু বলব না; কারণ, তুমি ভালো অবস্থায় আছ। তোমার কয়েকটা নেট (অনুশীলন) সেশন দেখেছি, এটাকে কন্টিনিউ করবা। যখন সেট হবা, ইনিংসকে বড় করার চেষ্টা করবা।
প্রশ্ন: টেস্টে তিনটি ফিফটি আছে, একটি সেঞ্চুরি। তিন ফিফটির সব ইনিংসে ক্যাচ আউট হয়েছেন। বল খেলেছেন ১০০, এমনকি ২০০-এর ওপরেও। তার মানে খুব ভালোভাবেই সেট হয়েছেন। কিন্তু ইনিংসগুলোর বেশির ভাগই সেঞ্চুরিতে রূপ নেয়নি। শেষ না করে আসতে পারায় কি মনস্তাত্ত্বিক কোনো বিষয় আছে?
জয়: না, আসলে মনস্তাত্ত্বিক কোনো চাপ থেকে নয়। চেষ্টা করি ইনিংসকে তিন অঙ্কে নেওয়ার; কিন্তু ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় ভালো বলেও আউট হয়ে যেতে পারি, আবার খারাপ বলেও আউট হয়ে যেতে পারি। কিন্তু চেষ্টা করি ইনিংসকে বড় করার।
প্রশ্ন: নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ওটাই ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি। ঐতিহাসিক জয়ে অবদান রাখা ইনিংসটাই কি এখন পর্যন্ত আপনার সবচেয়ে স্মরণীয় ইনিংস মনে করেন?
জয়: হ্যাঁ, অবশ্যই (স্মরণীয় হয়ে থাকবে)। নিউজিল্যান্ডের মাঠে তাদের হারানো অত সহজ নয়। দেখুন, ওরা বিশ্বের সেরা দলগুলোর মধ্যে একটা। তাদের বোলিং লাইনআপ অনেক শক্তিশালী। আমরা যখন ওদের সঙ্গে খেলেছি, ওদের মূল বোলিং আক্রমণ ছিল। ওদের বিপক্ষে রান করার পর আমার আত্মবিশ্বাস অনেক দৃঢ় হয়, আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। হ্যাঁ, ওই ইনিংসটা ভূমিকা রেখেছে (এগিয়ে যেতে)।
প্রশ্ন: টেস্ট খেলছেন, অবশ্যই বড় ব্যাপার। তবে যে ৫০ ওভারে যুব বিশ্বকাপ জিতেছেন, সেই সংস্করণের বাংলাদেশ দলে এখনো অভিষেক হয়নি। সাদা বলের ক্রিকেটে জায়গা পেতে নিজের কোথায় উন্নতি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
জয়: আমি কিন্তু শেষ কয়েকটা ওয়ানডে সিরিজের দলে ছিলাম। হয়তো আমার আরও অনেক কিছুর উন্নতি করা প্রয়োজন। যেগুলো বাকি আছে সেগুলো উন্নতির পর অভিষেক হতেও পারে। যদি ঘরোয়া লিগে ওয়ানডে ফরম্যাটে ভালো করি, যেমন প্রিমিয়ার লিগে যদি আরও ভালো করি, তাহলে হয়তো সুযোগ আসতে পারে। ও দিকেও নজর আছে, কীভাবে নিজেকে তৈরি করা যায়।
প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কায় হতে যাওয়া এবার ইমার্জিং এশিয়া কাপের দলে আছেন। এ টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ কখনো জেতেনি। যুব বিশ্বকাপের মতো এবার ইমার্জিংয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কতটা সম্ভব বলে মনে করেন?
জয়: হ্যাঁ, অবশ্যই আশাবাদী। আমাদের অনেক ভালো দল করা হয়েছে। চেষ্টা করব চ্যাম্পিয়ন
হতে। বাকিটা দেখা যাক ভাগ্যে কী লেখা আছে।