নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
সাধারণত বিয়েতে বর-কনেকে আশীর্বাদ করতে আসেন অতিথিরা। সঙ্গে নিয়ে আসেন উপহারসামগ্রী। অনেকে দেন স্বর্ণালংকারসহ টাকা। বৃষ্টির আশায় নওগাঁর নিয়ামতপুরে গত শুক্রবার এমন এক বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের সবকিছু ঠিক থাকলেও বর-কনের জায়গায় ছিল দুটি ব্যাঙ। আর এই বিয়ের পরপরই নামে বৃষ্টি।
বৃষ্টির আশায় উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই বিয়ের আয়োজন করে। গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আয়োজন চলাকালীন নামে বৃষ্টি। এতে বৃষ্টির আশা পূরণ হয়েছে বলে জানান বিয়ের আয়োজকেরা।
জয়পুর গ্রামের মহিদ্র পাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস থেকে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়। আগে বৃষ্টির আশায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হতো। কিন্তু এখন তেমন দেখা যায় না। তিনি আরও বলেন, এবারের চিত্রটি আগের বছরগুলোর থেকে ভিন্ন। আষাঢ় মাস শেষ হলেও বৃষ্টির অভাবে এখনো আমন ধান রোপণ করা যায়নি। তাই গ্রামের লোকজন একত্র হয়ে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। নারী-পুরুষ মিলে শত লোকের উপস্থিতিতে এই বিয়ে হয়। বিয়ের আয়োজন শেষে সবার মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।
বিয়ের পুরোহিত বৈশাখ পাহান বলেন, বাংলাদেশে এর আগে এমন খরা কখনো দেখা যায়নি। সাধারণত অনাবৃষ্টি ও খরা থেকে মুক্তি পেতে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করত শিশুরা। পরে বড়রা যোগ দিয়ে তা গ্রামের সবার উৎসবে পরিণত হতো। তাঁর বিশ্বাস, ব্যাঙের বিয়ের মাধ্যমে অনাবৃষ্টি ও খরা কেটে যাবে। নামবে মুষলধারে বৃষ্টি।
বিয়েতে বর ব্যাঙের মা প্রতিমা বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছেন, অনাবৃষ্টি হলেই এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করে। গ্রামের মানুষের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে, ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি নামবে। সেই আশা নিয়েই সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করেছেন।