হোম > ছাপা সংস্করণ

ছোট দেহে বড় রোগের হানা

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

সামান্য জ্বর, পরে যে পরীক্ষায় ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে, তা কি ভেবেছিলেন পাঁচ বছর বয়সী শিশু মহসীনের মা-বাবা?

মহসীনের মা-বাবা বলেন, এক মাস ধরে জ্বর ছিল মহসীনের। সঙ্গে ছিল লাল দানার মতো দাগ। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক দেন। প্রথম দু-চার দিন কিছুটা উন্নতি হলেও আবার জ্বর আসে। এরপর তাঁরা চিন্তায় পড়েন। পরে শিশু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন।

এদিকে চার বছর বয়সী শিশু রেজাকে গোসল করাতে গিয়ে মা অনুভব করেন, তার শরীরে চাকাসদৃশ বস্তু। পরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করান। রেজার ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে। সারা দিন ঘর যারা মাতিয়ে রাখত, তারা ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা হয় দুই পরিবারে।

মহসীন চিকিৎসা নিচ্ছে চট্টগ্রাম মা, শিশু জেনারেল হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (শিশু ক্যানসার ও রক্তরোগ বিভাগ) ডা. ইন্দিরা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে। এই চিকিৎসক বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় রক্তে ক্যানসার ধরা পড়ে শিশুটির। মহসীনকে তিন ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়েছে। প্রায় ছয় মাস ইনটেনসিভ থেরাপির পর মহসীনের এখন মেইনটেন্স থেরাপি চলছে। তিন বছর তার চিকিৎসা চলবে।

চার বছরের শিশু রেজার বাড়ি কক্সবাজারে। রেজাও ডা. ইন্দিরা চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে ছিল।

সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় নিশ্চিত হয় তার অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া হয়েছে। তার অপারেশনের আগে কেমোথেরাপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রায় তিন মাস কেমো দেওয়ার পর অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর সিদ্ধান্ত হয় রেডিওথেরাপি দেওয়ার। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় রেডিওথেরাপি দেওয়া সম্ভব হয়নি। কেমোথেরাপি শেষ হলেও রক্ষা মেলেনি রেজার। চার মাস আগে রেজাকে তার বাবা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এক্স-রে করলে দেখা যায় বুকে পানি জমেছে।

পরীক্ষা করালে দেখা যায়, ক্যানসার তার শরীরে আবারও বাসা বেঁধেছে। পরে তাকে সাইকেলথেরাপি দিয়ে বাসায় নিয়ে যায় তার পরিবার। কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর পরবর্তী থেরাপি নিতে তাঁরা রাজি হননি। কিছুদিন পর শিশুটি মারা যায়।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ছয়জন এবং আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২০২১ সালে চিকিৎসা নেয় ক্যানসার আক্রান্ত ৩১ শিশু। তাদের সবার বয়স ৫ বছরের নিচে। তাদের কারও কেমোথেরাপি চলছে, কারও আবার সদ্য অস্ত্রোপচার হয়েছে।

গবেষকেরা বলছেন, রক্ত, লিভার ও কিডনির ক্যানসার বেশির ভাগ দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। জিনগত পরিবর্তনের ফলে গর্ভাবস্থায় থাকা কিছু ভ্রূণ কোষ শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগের অবস্থায় থেকে যাওয়া এবং অস্থিমজ্জায় অস্বাভাবিক বিভাজনই শিশুদের ক্যানসার আক্রান্তের অন্যতম কারণ। তেজস্ক্রিয়া রশ্মি, রাসায়নিক দ্রব্যও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডা. ইন্দিরা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ২০২১ সালে ৩১ শিশুর ক্যানসার ধরা পড়ে। তাদের মধ্যে ১০ জন অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়ায়, অ্যাকুইট মায়েলয়েড লিউকোমিয়ার ৩ জন, এন হজকিন লিম্ফোমায় ৪ জন, হেপাস্টোব্লাস্টোমায় ৩ জন। এ ছাড়া জার্মসেল টিউমার হয় দুজনের। এ দুজনই চিকিৎসা শেষে বর্তমানে সুস্থ। ওইলমুস টিউমার পাঁচজন, ইউংস সারকোমায় একজন, রেটিনোব্লাস্টেমায় (চোখের টিউমার) দুজন ও রেবডোমায়ো সারকোমায় একজন আক্রান্ত হন।

গতকাল সোমবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা গেছে, সেখানে ক্যানসার আক্রান্ত ছয় শিশুর চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে আছে কক্সবাজার থেকে আসা পাঁচ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার, কুতুবদিয়ার তিন মাস বয়সী হাবিবুর রহমান, বন্দরের ফ্রি পোর্ট এলাকার ৯ মাস বয়সী সাজিব, আগ্রাবাদ ব্যাপারীপাড়ার আট বছর বয়সী মো. মরিয়ম, বাঁশখালী থেকে আসা ১০ বছর বয়সী মো. এনাম।

চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের প্রধান জগদীশ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘ক্যানসার আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা রক্ত ক্যানসারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এখন আমাদের ১৪টি শয্যার বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছে ৬ জন।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন