শাহীন আলম, দেবিদ্বার
দেবিদ্বারে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ হাইড্রোলিক হর্নে হচ্ছে শব্দদূষণ। চালকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল এলাকায় কোনো বাছ-বিচার করছেন না। অযথা নিজেদের ইচ্ছেমতো বাজাচ্ছেন হর্ন।
পৌরসদর এলাকায় কয়েক হাজার বাস, ট্রাক্টর ও অটোরিকশা চলাচল করে। চারপাশ থেকে লাগাতার হর্ন বাজায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা।
নিউইয়র্ক প্রবাসী ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, ‘উচ্চমাত্রার শব্দ মানুষের শ্রবণশক্তি ও স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। কানে শোনার ক্ষমতা কমে যায়। ঘুম কম হয়। বিরক্তির মাত্রা বেড়ে যায়। শব্দের কারণে শিশুদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়।’
গতকাল সোমবার সকালে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও এসএ সরকারি কলেজ রোডে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহনের জট। এসব একসঙ্গে হর্ন বাজাতে বাজাতে চলছে। এতে অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছে স্কুলগামী শিশুরা।
আইন অনুযায়ী, হাসপাতাল বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এলাকায় হর্ন বাজানো নিষেধ। এটি অমান্য করলে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের একপাশে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, অন্যপাশে আরও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এ হাসপাতালগুলোতে শত শত রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু যানবাহনের হর্নের আওয়াজে রোগীদের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ছে।
উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুরাদনগর থেকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন মো. কবীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেবিদ্বারে চিকিৎসা নিতে এসে মাথায় যন্ত্রণা নিয়ে ফিরছি। গাড়ির হর্নের শব্দ মাথার মগজে ঢুকে গেছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আহাম্মদ কবীর বলেন, বেশির ভাগ চালকের প্রশিক্ষণ নেই। তাঁরা সড়কে অহেতুক হর্ন বাজান। এতে মারাত্মকভাবে বেড়েছে শব্দদূষণ। শিশুসহ সব বয়সী মানুষের শ্রবণশক্তি দিন দিন কমছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক উন নবী তালুকদার বলেন, ‘হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধের জন্য কারও কাছ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে হাইড্রোলিক হর্ন যাঁরা বাজান, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’