সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যা মামলার পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আদালতে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার মুখ্য মহানগর হাকিম আমিরুল ইসলাম এ নির্দেশ দেন।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও আসামি নোমান হাজির না হলে তাঁর অনুপস্থিতেই মামলার বিচারকাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তায় বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ উপপরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় নিহত রায়হানের পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল জানান, এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আব্দুল্লাহ আল নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশে পুলিশ পলাতক নোমানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোনো মালামাল পায়নি। এমতাবস্থায় তাঁর অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ৫ মে আলোচিত এ মামলায় পাঁচ পুলিশসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
অভিযুক্তরা হলেন, অভিযুক্তরা হলেন- বন্দরবাজার ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ উপপরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভুঁইয়া, উপপরিদর্শক হাসান উদ্দিন, সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ এবং ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবকারী কথিত সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান।
এদের মধ্যে পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান পলাতক রয়েছেন।
গত বছরের ১১ অক্টোবর ভোরে সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে এনে নির্যাতন করেন ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ পুলিশ সদস্যরা। পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
রায়হান আহমদকে হত্যার পরদিন ১২ অক্টোবর তাঁর স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।
পুলিশের হেফাজতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে চলে নানা কর্মসূচি।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু করে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ‘মামলার মূল সব আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এখন কথিত সাংবাদিক নোমান পলাতক রয়েছে। আমরা শুনেছি নোমান দেশে ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন তিনি ফ্রান্সে অবস্থান করছেন। তাই আর বিলম্ব না করে দ্রুত মামলার বিচারকাজ শুরু করা হোক। আর পলাতক নোমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তির মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছি।’