হোম > ছাপা সংস্করণ

সংসারের হিসাব মেলাতে হিমশিম নিখিলেরা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

‘কত স্বপ্ন ছিল, ছেলেটাকে লেখাপড়া শেখাব। সেই স্বপ্ন ভেঙে গেল। এখন দিনরাত পরিশ্রম করেও সংসার চালাতে পারি না।ছেলেমেয়েদের কোনো আবদার পূরণ করতে পারি না।’ এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সদর উপজেলার বাণীবহ গ্রামের বাসিন্দা নিখিল ঘোষ।

নিখিল ঘোষ জানান, জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির ফলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ এখন কোনোমতে জীবনসংগ্রামে টিকে আছে। টিনের বাক্স কাঁধে করে গ্রামেগঞ্জে ঘুরে ঘুরে গজা বিক্রি করেন তিনি। সংসারে আছে তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে।

নিখিল বলেন, ‘কী বলব কষ্টের কথা। আগে তো সংসার ভালোই চলত। দিনে ৭০০-৮০০ টাকা রোজগার হতো। ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া শেখানোর স্বপ্ন ছিল। এখন মাইলের পর মাইল হেঁটেও ৩০০ টাকা আয় করা সম্ভব হয় না। জিনিসপত্রের দাম বেশি। যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না। এর ওপর সমিতি থেকে নেওয়া কিস্তির বোঝা তো আছেই।’

নিখিল আরও বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মানুষ এখন গজা কিনতে চায় না। আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে। মাসে দু-তিন দিন মাছ খাওয়া হয়। বড় মাছ কেনার ইচ্ছে থাকলেও পারেন না। ছোট মাছ কেনেন। তরকারির মধ্যে আলু ছাড়া অন্য কিছুর দাম অত্যধিক বেশি।

খাল-বিলে কুঁচিয়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বীরেন্দ্র বিশ্বাস। তিনি সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল গ্রামের বাসিন্দা। বীরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ছোটকালে বাবার সঙ্গে থেকে কুঁচিয়া ধরতেন। পৈতৃক পেশা হিসেবে এটাই হয়ে গেছে তাঁর জীবিকার উৎস। ২০ বছর ধরে এ পেশাতেই আছেন তিনি। রাজবাড়ী ছাড়াও বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে কুঁচিয়া ধরেন। রাজবাড়ীর বাইরে গেলে একবারে ছয় মাসের জন্য বের হন।কুঁচিয়া ধরে মহাজনদের দিয়ে যখন অনেক টাকা পেতেন, সব কষ্ট ভুলে যেতেন। এখন তাঁর এ ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। আগে আড়াই শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেন, এখন ১৪০ টাকা কেজি।

বীরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আয়-ব্যয়ের কোনো সমন্বয় নেই। তাঁর ১৪ বছর বয়সী মেয়ে রাজবাড়ীর একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ৯ মাসের বেতন বাকি তার। এক মাস বেতন দিয়ে থামিয়ে রেখেছেন। ১০ বছরের ছেলে সুদেব পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। ছেলে-মেয়েদের কোনো আবদার তিনি মেটাতে পারেন না। তারা কোনো কিছু আবদার করলে বুঝিয়ে-শুঝিয়ে রাখেন। চোখে জল আসে। দুঃখে বুক ফাটে। কাউকে বলতে পারেন না।

সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কালিচরণপুর গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, ছোট একটি দোকান আছে তার। মাঝেমধ্যে মাঠে-ঘাটেও কাজ করেন। স্ত্রীসহ ছয়জনের সংসার তাঁর। দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে কোনোমতে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাফরুল হান্নান বলেন, যাদের নির্ধারিত আয়, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।বড় ব্যবসায়ীরা উচ্চমূল্যে পাইকারি বাজারে বিক্রি করছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আরও উচ্চমূল্যে বিক্রি করছেন। এখন তিনটি শ্রেণি লাভবান হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাতে আগে যে পরিমাণ টাকা ছিল, তা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্নবিত্তরা। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ কষ্টে জীবন যাপন করছেন। তিনি আরও বলেন, যারা নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণি, তারা খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া দেশে চাকরিজীবী শ্রেণি আছে প্রায় ৫০ ভাগ। এঁরাও কষ্টে আছেন। পাশাপাশি দিনমজুর, রিকশাচালকেরাও আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন। এখানে শুধুই ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন