কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
আধিপত্য বিস্তারে হত্যা, হামলা, মামলা, সংঘর্ষ ও গ্রেপ্তারের ভয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সদকী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রাম এখন জনশূন্য।
সংঘর্ষ বন্ধে শান্তি সমাবেশের ৯ দিন পর গত শনিবার দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। এর পর আতঙ্কে পালিয়ে গেছেন গ্রামের মানুষ। ভাঙা ঘরবাড়ি ও অবশিষ্ট মালামাল পাহারা দিচ্ছে পুলিশ।
গতকাল রোববার দুপুরে চরপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মোড়ে পুলিশ রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দারা কেউ নেই। প্রায় সব বাড়িতেই ভাঙচুরের ক্ষত রয়েছে। নেই গৃহপালিত পশুপাখি ও অন্যান্য মালামাল।
বেলা ১টা ১৫ মিনিটে পাশের গ্রাম গোপালপুরের মাজু খাঁ সরদার নামের এক বৃদ্ধ জোহরের আজান দেন। কিছু সময় পরই তিনজন পুলিশ সদস্য মসজিদে ঢোকেন। সঙ্গে একজন সাংবাদিক। বেলা দেড়টায় জোহর নামাজের জামাত হয়। চারজন মুসল্লি নিয়ে জামাতে ইমামতি করেন একজন পুলিশ সদস্য।
বৃদ্ধ মাজু খাঁ সরদার বলেন, গত ১ আগস্ট সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পর একপক্ষ পালিয়েছে। প্রাণভয়ে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনও চলে গেছেন। কেউ মসজিদে আসেন না। সময় পেলে তিনি গিয়ে আজান দেন। কখনও একাই নামাজ পড়েন। কখনও পুলিশের সঙ্গে নামাজ পড়েন।
তিনি আরও বলেন, গত শনিবারের সংঘর্ষের পর পুরো গ্রামের লোক পালিয়ে গেছেন। গতকাল জোহরের নামাজে একজন পুলিশ সদস্য ইমামতি করেছেন। গত শুক্রবার বাইরে থেকে হুজুর ডেকে এনে জুমার নামাজ পড়েছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১ আগস্ট হুমায়ূন হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ওই মামলার আসামিরা জামিনে বের হয়ে দু-শতাধিক সমর্থক নিয়ে গত শনিবার সকালে গ্রামে গেলে বাদীপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন গুরুতর আহত হন। এর আগে ১১ আগস্ট সন্ধ্যায় সংঘাত বন্ধে চরপাড়ায় শান্তি সমাবেশ করা হয়েছিল।
সদকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাজুল আবেদীন দ্বীপ বলেন, আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে ধ্বংসের পথে চরপাড়া। গ্রামটিতে স্থায়ী শান্তির জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, গত শনিবার সেলিম হত্যা মামলার আসামিরা বাড়িতে ওঠে। এ নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত চারজন গুরুতর আহত হন। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় এখনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কোনো মামলাও হয়নি।