ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখল করছেন প্রভাবশালীরা। বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত এ অবস্থা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বোয়ালমারীতে সওজের জমিতে অবৈধ দোকানঘর করে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া আদায় করছিলেন। কেউ কেউ সওজের জমিতে ঘর তুলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন।
গত ২ এপ্রিল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদা মোড় থেকে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ওই সড়কের উভয় পাশের প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সওজ কর্তৃপক্ষ। এতে সওজের প্রায় দুই থেকে আড়াই একর জমি দখলমুক্ত করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা।
ওই সময় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল ইসলাম, মো. রেজাউল করিম, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাদি হুমায়ুন কবির বাবু, রাজবাড়ি খানখানাপুরের মো. আমির হোসেন, ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ, মো. আহাদুল করিম প্রমুখের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার মাস খানিকের মধ্যেই আবার আগের দখলদারদের দখলে চলে গেছে অধিকাংশ জমি। আবার তোলা হয়েছে দোকানঘর।
বোয়ালমারী চৌরাস্তাসংলগ্ন বঙ্গবন্ধু চত্বরের পূর্ব পাশে ফরিদপুরের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম খানের তেল ও গ্যাসের দোকান ‘খান ট্রেডার্স’ উচ্ছেদের পর আবার দখলে চলে গেছে।
মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কের মোড়ে অবস্থিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর আবার দখল করে ভাড়া দিয়েছেন ছোলনা গ্রামের ইকবাল। এ ছাড়া আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার কাছে বটতলা নামক স্থানে আধারকোঠার বাসিন্দা সামাদ মৃধা, পঙ্কজ রাজবংশী, চতুল নিবাসী আকরামুজ্জামান মৃধা রুকু, পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত মীর টাইলসের মালিক আবুল বাশার মীর, চৌরাস্তায় আমির হোসেন, শেফা এন্টারপ্রাইজের শরিফুল ইসলামের ঘর উচ্ছেদের পর ফের দখল নিয়েছেন।
পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের সামনে অবস্থিত ছোলনা সালামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার মালিকানাধীন দোকানঘর এবং চৌরাস্তার আমিরুল ইসলাম চৌধুরীর ভবনের অংশবিশেষ সরকারি জমিতে হওয়ায় তা ভেঙে দিলেও ফের দখল হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আল হাসান মহিলা মাদ্রাসার কাছে বটতলায় সামাদ মৃধার মালিকানাধীন দোকান ঘরের ভাড়াটিয়া বলেন, সবাই আবার ঘর তুলে আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন, তাই তাঁর ঘরের মালিকও আগের অবস্থানে ফিরে গেছেন। আবার উচ্ছেদ করতে এলে দোকানের মালামাল সরিয়ে নেবেন বলে জানান তিনি।
সওজের উচ্ছেদ করা জমি ফের দখল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী কামরুল সিকদার বলেন, উচ্ছেদের কয়েক দিন পরেই সওজের জমিতে আবার অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ লাভলী বেগম বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের দখলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের ফরিদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, উচ্ছেদ করা জমি ফের দখল হলে আবার নোটিশ দিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।