মীর মো. মহিব্বুল্লাহ, পটুয়াখালী
করোনার সংক্রমণ রোধে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দেওয়া ১১ দফা নির্দেশনা ও বিধিনিষেধ জারি করা হলেও মানা হচ্ছে না লঞ্চে। পটুয়াখালী থেকে ঢাকাগামী ডাবল ডেকার লঞ্চগুলো বিধি উপেক্ষা করে অনেকটা স্বাভাবিক সময়ের মতো চলছে। তৃতীয় শ্রেণির যাত্রীরা লঞ্চে আসন নেওয়া কিংবা ওঠানামায় স্বাস্থ্যবিধি কেউ মানছেন না। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত কোনো প্রচার-প্রচারণাও দেখা মেলেনি লঞ্চ কিংবা বিআইডব্লিউ কর্তৃপক্ষ থেকে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন পটুয়াখালী লঞ্চ ঘাটে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। এতে একদিকে যেমন লঙ্ঘন হচ্ছে নিয়ম, তেমনি রয়েছে সংক্রমণ বিস্তারের আশঙ্কা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা বিস্তার রোধে ১০ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে সব ধরনের জনসমাগমে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী ধারণ, চালক ও সহকারীদের করোনার টিকার সনদধারী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ১৩ তারিখ থেকে দেশব্যাপী বিধি কার্যকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তবে বিধি আরোপের সাত দিনেও পটুয়াখালী ঘাটে ঢাকা অভিমুখে যাত্রার জন্য অপেক্ষমাণ তিনটি ডাবল ডেকার লঞ্চে যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে গা ঘেঁষে। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির আসনে গাদাগাদি করে অবস্থান নিয়ে আছেন যাত্রীরা। এমনকি লঞ্চ ঘাটে ঢুকতে গা ঘেঁষানো ভিড় দেখা গেছে। অধিকাংশ যাত্রীর মুখে নেই মাস্ক।
একটি লঞ্চের তৃতীয় শ্রেণির (ডেক) যাত্রী খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমি আমতলী থেকে আইছি, ঢাকা যামু। এহানে কেউ মাস্ক পরে নাই, আমিও পরি নাই। সবাই পরলে আমিও মাস্ক পরমু।’
আরেক যাত্রী রফিকুল আলম বলেন, ‘আমাগো করোনা অয় না। মাস্ক পরে না কেউ, তারপরও সবাই ভালো আছে। সবাই মাস্ক ব্যবহার করলে আমিও মাস্ক পরবো। আসলে করোনা নাই।’
ওই লঞ্চের সুপারভাইজার বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় লঞ্চের যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলা হয়। কিন্তু যাত্রীরা তারপরও শোনে না। লঞ্চ ঘাটে ঢোকার সময় কর্তৃপক্ষ যদি একটু সচেতন করত—তাহলে এমনটা হতো না। এ ছাড়া ঢাকাতে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে, তবে এখানে একটু ঢিলেঢালা।’
অন্য একটি লঞ্চের সুপারভাইজার বলেন, ‘লঞ্চে প্রবেশের সময় আমরা যাত্রীদের বলে দিই মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য। এ ছাড়া আমরা ফ্রি মাস্কও দিয়ে থাকি, কিন্তু যাত্রীরা তা পরে না। আসলে যার যার স্বাস্থ্য সচেতনতা নিজের কাছে।’
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী নদী বন্দর কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিনের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যার যার স্বাস্থ্যবিধি তার তার কাছে, এখানে আমাদের কী করার। আমরা তো আর জোর করে মানাতে পারব না। এ ব্যাপারে ভাই আপনি আর প্রশ্ন কইরেন না।’