কামাল হোসেন, কয়রা
খুলনার কয়রা উপজেলায় লোনাপানি থেকে ফসল রক্ষা এবং মিঠাপানি ধরে রাখার জন্য ২৭টি স্লুইসগেট রয়েছে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে নাজুক হয়ে পড়েছে। মেরামত না করায় স্লুইসগেটগুলো যেকোনো সময় ভেঙে লবণপানিতে এলাকা তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন এলাকাবাসী।
কয়রা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কয়রায় ১৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এই বাঁধের ২৭টি স্থানে স্লুইসগেট আছে। ১৩-১৪/২ পোল্ডারে অবস্থিত ১৬টি স্লুইসগেটের মধ্যে কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন, নয়ানি, কুশুডাঙ্গা, কাঠমারচর এবং ১৪/১ পোল্ডারের সাতটি কপাটের মধ্যে ওড়াতলা, পদ্মপুকুর, বিনাপানি ও হাজতখালী সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে পড়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে এসব কপাট পুনর্নির্মাণের কোনো সম্ভাবনা নেই। কোনোরকমে পানি নিষ্কাশন চালু থাকলেও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে নকশা, মসজিদকুড়, আমাদী, খোড়লকাঠী, শালুকখালী, হোগলারখাল, লালুয়া, নারায়ণপুর, গোবিন্দপুর, গড়ীয়াবাড়ী, জোড়শীং ও কয়রা স্লুইসগেট।
স্থানীয়রা জানায়, নব্বইয়ের দশকে বেশির ভাগ কপাট নির্মিত হলেও পরে তা আর মেরামত করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে আটটি কপাট একেবারে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পানে হাজতখালী স্লুইসগেট ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। আর ধসে যাওয়ার চার বছরেও নির্মাণ করা হয়নি কয়রা গুচ্ছগ্রামসংলগ্ন ওড়াতলা স্লুইসগেট। সচলগুলোর বেশির ভাগ স্লুইসগেট ভেঙে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গত শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশির ভাগ স্লুইসগেট ভাঙা, কোনোটির দুটি কপাটের মধ্যে একটি ভাঙা। আবার অনেকাংশে দেখা যায়, দুটি কপাটই সম্পূর্ণ আটকানো। মরিচা ধরায় এগুলো ওঠানো কিংবা নামানো যায় না। আর ভাঙা কপাট দিয়ে জোয়ারের পানি এলাকায় ঢোকে। তদারকির অভাবে এসব মূল্যবান সম্পদ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মশিউল আবদিন বলেন, ‘স্লুইসগেট সংস্কারের বিষয়টি মেকানিক্যাল দপ্তর দেখভাল করে। অকেজো ও ঝুঁকিপূর্ণ স্লুইসগেটের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। অনুমোদন ও বরাদ্দ পেলে শিগগিরই নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।’