ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
পূর্ব সুন্দরবনে এবার মধুর সংকট দেখা দিয়েছে। বনে কাঙ্ক্ষিত মধু না পেয়ে গত তিন দিনে শতাধিক মৌয়াল বাড়ি ফিরেছেন। মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা তাঁরা।
উপজেলার দক্ষিণ সাউথখালী গ্রামের মৌয়াল ছগির মোল্লা বলেন, সুন্দরবনে এবার মৌমাছি নেই। মধুর চাক তেমন দেখা যায় না। গত ১০ দিন বনের মধ্যে ঘুরে ১৫টি চাকে ১০ কেজি মধু পেয়েছেন। তাঁরা দলে ১১ জন। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে পঞ্চাশ হাজার টাকা দাদন নিয়ে মধু সংগ্রহে গিয়ে মধু না পেয়ে ফেরত এসেছেন। এখন কীভাবে মহাজনের টাকা পরিশোধ করবেন, সেই চিন্তায় আছেন। এ বছর তাঁরা ঈদ করতে পারবেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেন ছগির মোল্লা।
একই কথা জানান বন থেকে ফিরে আসা বগী দশঘর গ্রামের মৌয়াল নান্না ফরাজী। তিনি বলেন, তাঁর দলে ১২ জন লোক। ১১ দিন বনে ঘুরে ৩০ কেজি মধু সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
সুন্দরবনে কাঙ্ক্ষিত মধু না পাওয়ার কথা জানান তেরাবাকা গ্রামের মৌয়াল মোতালেব হাওলাদার, মাহাবুব তালুকদার, বগী গ্রামের মোফাজ্জেল খান ও নান্না মিয়াসহ আরও অনেকে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মধু আহরণের জন্য সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ থেকে ৪১টি পাস (অনুমতিপত্র) দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ শতাধিক মৌয়াল দুই সপ্তাহের পাস নিয়ে ১ এপ্রিল সুন্দরবনে যাত্রা করে। বনে গিয়ে মৌয়ালেরা মধুর তেমন চাক পাচ্ছেন না। দু-একটি চাক পেলেও তাতে মধু খুবই কম পেয়েছেন। কাঙ্ক্ষিত মধু না পেয়ে মৌয়ালেরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। দুদিনে শরণখোলার শতাধিক মৌয়াল শরণখোলা স্টেশন অফিসে পাস সমর্পণ করে বাড়ি গেছেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর সুন্দরবনে মৌমাছি আগের মতো বাসা বাঁধেনি, তাই মধু পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে পেয়েছেন, তবে পরিমাণে কম। গত বুধবার সকাল পর্যন্ত মৌয়ালেরা স্টেশন অফিসে ১০টি পাস ফেরত দিয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।