সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক দিন ধরে চলা শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আবাদের সময় ধানের চারার সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন চাষিরা।
গতকাল শুক্রবার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক বীজতলা হলুদ রঙের হয়ে গেছে। ধানের চারা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৃষকেরা বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন। এতে ক্ষতি কিছুটা কম হবে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
সদর উপজেলার দানারহাট গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, ‘আমন মৌসুমে ধানের সঠিক মূল্যে না পাওয়ায় লাভের মুখ দেখতে পারছি না। এ জন্য বোরো আবাদ করে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু শীতের কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছি। কুয়াশায় বীজতলার ঠান্ডা পানি জমে চারা মরে যাচ্ছে। আর যে অংশটুকু ভালো, সেখানে চারা বড় হচ্ছে না।’
একই এলাকার কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, ‘তীব্র শীতে বীজতলার চারা মরে যাচ্ছে। এ ছাড়া চারা লালচে রঙের হয়ে গেছে। বড়ও হচ্ছে না। কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশে নিয়মিত কীটনাশক ও গভীর নলকূপের গরম পানি দিচ্ছি। এমন আবহাওয়া যদি আরও কয়েক দিন থাকে, তাহলে আবারও বীজতলা তৈরি করতে হবে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। চাষের মৌসুমে চারা না-ও পাওয়া যেতে পারে।’
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর ঠাকুরগাঁওয়ে বোরো বীজতলার জন্য ২ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে। অন্যদিকে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৯ হাজার ১১৪ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৭৩ মেট্রিক টন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, কয়েক দিন থেকে এই জেলায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। তাপমাত্রা ৮ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এই শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখাসহ সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।