মেহেরাজ হোসেন সুজন, নানিয়ারচর (রাঙামাটি)
রাঙামাটির নানিয়ারচরের চাষিরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। কম দামে বিক্রি হলেও মাল্টাবাগানে পরিশ্রমের তুলনায় ভালো ফলনের কথা মাথায় রেখে এই ফল চাষে আগ্রহ বেড়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে উপজেলায় ১৭ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে পাঁচ টন মাল্টা উৎপাদিত হয়েছে।
উপজেলার দুটি সাপ্তাহিক বাজার নানিয়ারচর সদর বাজার ও ঘিলাছড়ি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে পাকা মাল্টা বিক্রি হচ্ছে। এসব মাল্টা ব্যাপারীরা কিনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান।
উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের চৌধুরীছড়া গ্রামের মাল্টাচাষি হেমেলিন্দু চাকমা বলে, তিনি কলাবাগানের মাঝে মাঝে মাল্টার চারা রোপণ করেছেন। এবার প্রায় ৮০০ কেজি হয়েছে, ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করেছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মেজবাহ্ উদ্দিন জানান, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মাল্টা পূর্ণতা পায়। মৌসুমের আগে বা পরে ছেঁড়া হলে মাল্টার পূর্ণতা হবে না এবং রস কম হবে। এই সময়ে মাল্টা সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে। তবে হলুদ বর্ণের করতে হলে কিছু প্যাকেটের ব্যবস্থা করতে হয়, পাহাড়ের হতদরিদ্র কৃষকদের জন্য সেই খরচটা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা মাল্টার পূর্ণ বয়স হলেই সবুজ বর্ণের মাল্টা বিক্রি করেন। ক্রমেই উপজেলার চাষিদের মধ্যে মাল্টা চাষের আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা বলেন, মাল্টা চাষে তেমন কোনো বাড়তি খরচ না হওয়ায় খুব সহজেই কৃষকেরা এই ফল চাষে লাভবান হন। এই উপজেলার মাটি মাল্টা চাষের উপযোগী। ফলটি চাষে এখানকার কৃষকদের যে উৎসাহ বাড়ছে, তা ধরে রাখতে পারলে নানিয়ারচর আনারস চাষে যেমন বিখ্যাত, পাশাপাশি মাল্টা চাষেও বিশাল অবদান রাখবে।