নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডেঙ্গুর সংক্রমণ ও মৃত্যু দিন দিন বাড়ছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে ১৯ জন মারা গেল। এ ছাড়া এ বছর ১০২ জনের মৃত্যু হলো ডেঙ্গুতে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৩৪ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো প্রায় ১৭ হাজার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৬১৫ জন। মারা গিয়েছিল একজন। এই সংখ্যা বিবেচনায় নিলে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা কমলেও মৃত্যু বেড়েছে। ডেঙ্গুর এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, সরকারকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা সম্পর্কে আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে আসছেন। তবে সরকার সেই বার্তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘২০১৯ থেকে ডেঙ্গু সম্পর্কে যতগুলো পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, তা সঠিক ছিল। কিন্তু কোনো সরকারই সেটির গুরুত্ব দিয়ে কাজ করেনি। গুরুত্ব দেওয়া হলে দেশে ডেঙ্গুতে এত বিশাল জনগোষ্ঠীর আক্রান্ত বা মৃত্যু কোনোটিই হতো না। চলতি মাসে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা প্রতিদিনই বাড়বে। এটি কমাতে না পারলে অক্টোবরে সারা দেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়বে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের হাসপাতালে। অপর দিকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং খুলনা বিভাগের হাসপাতালে একজন করে মোট তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৮ জন। এ মাসে গড়ে দৈনিক চার শ রোগী শনাক্ত হয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে মৃত্যু হয় দুজনের। শনাক্ত হয় ৫০৪ জন। মে মাসে মৃত্যু ১২ জন এবং শনাক্ত হয় ৬৪৪ জন। জুনে মৃত্যু ৮ জন এবং শনাক্ত ৭৯৮ জন। জুলাই মাসে মৃত্যু ১২ জন এবং শনাক্ত ২ হাজার ৬৬৯ জন। আগস্টে মারা যায় ২৭ জন, শনাক্ত হয় ৬ হাজার ৫২১ জন, সেপ্টেম্বরের ১০ দিনে মারা যায় ১৯ জন এবং শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৯৭৮ জন রোগী। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। এ এলাকায় ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।