মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ হলো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের দুটি বাহু, দুটি হাতিয়ার এবং বিশ্ব অর্থনীতির দুটি চাকা। এ চাকা দুটি পরস্পর সমান্তরাল গতিতে না ঘুরলে বা না ঘোরাতে পারলে স্থবির হয়ে পড়ে সমগ্র অর্থনীতি। তাই মালিক ও শ্রমিকের সম্পর্ক সমান তালের হতে হবে। মালিক হওয়ার কারণে অহংকার করা শোভনীয় নয়। বরং অধীনস্থদের সঙ্গে সদাচরণ করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অধীন, তাদের প্রতি তুমি তোমার বাহুকে অবনত করো। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বলো, তোমরা যা করো, নিশ্চয়ই আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।’ (সুরা শুআরা: ২১৫-২১৬)
শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কেও মালিক সচেতন থাকবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা যা খাবে, তাদের তা-ই খাওয়াবে। তোমরা যা পরিধান করবে, তাদের তা-ই পরিধান করাবে। যদি তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করে, তবে বিদায় করে দেবে। তবুও তাদের শাস্তি দেবে না।’ (আহমদ)
শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে মহানবী (সা.) ছিলেন উত্তম দৃষ্টান্ত। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি মহানবী (সা.)-এর ১০ বছর খিদমত করেছি, তন্মধ্যে তিনি কোনো দিন আমাকে বলেননি—এখনো করোনি? করলে না কেন?’ (আহমদ)
মালিকদের জন্য আবশ্যক হলো শ্রমিকদের মানুষ হিসেবে সম্মানিত করা এবং তাদের অধিকারের প্রতি খেয়াল রাখা। কোনোভাবেই তাদের গালিগালাজ করা যাবে না। হাদিসে বর্ণিত আছে, একদিন মহানবী (সা.) দেখলেন আবু বকর (রা.) কোনো অন্যায়ের কারণে কোনো এক দাসকে ধমকাচ্ছেন। তখন নবী (সা.) বললেন, ‘তুমি কি সিদ্দিক নাকি অভিশাপকারী?’ এ কথা তাঁর মনে এমন প্রভাব বিস্তার করে যে সেদিন তিনি ওই দাসকে মুক্ত করে দিলেন।
ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়