মো. নাজিম উদ্দিন ইমন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
ঈদ মানে আনন্দ। আর এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ঈদের ছুটিতে সব বিনোদনকেন্দ্রে ছুটতে থাকেন মানুষ। তাই এবার ঈদ সামনে রেখে নতুন সাজে সেজেছে ঢাকার কেরানীগঞ্জের সব বিনোদনকেন্দ্র।
ঈদ উপলক্ষে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে আনোয়ার সিটি ম্যাজিক আইল্যান্ড, শরীফ ফুডকোর্ট, আটি বাজার ম্যারিন শিশুপার্ক, বেলনা ইকো রিসোর্ট, রাজাবাড়ী গার্ডেন পার্কসহ উপজেলার প্রায় সব বিনোদনকেন্দ্র। এ ছাড়া আহমেদ সাগর ক্যাফে, ক্যাফে কাঠবিড়ালি, গ্রিন স্কয়ার ক্যাফে, ক্যাফে রূপকথাসহ বিভিন্ন ক্যাফে ও রেস্তোরাঁগুলোও নতুন করে সাজানো হচ্ছে।
করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ঈদে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে মানুষকে। এমনিতেই অনেক বিধিনিষেধের মধ্যে কাটাতে হয়েছে গত দুই বছরের ঈদ। এর মধ্যে বন্ধ ছিল বিনোদনকেন্দ্রগুলো। তবে এ বছরের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এবার সরকারিভাবে কোনো বিধিনিষেধ নেই।
কেরানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কোথাও নতুন করে রং করা হচ্ছে। আবার কোথাও বিনোদনকেন্দ্রগুলোয় বসানো হচ্ছে ফুডকোর্ট। এ ছাড়া চলছে ধোয়ামোছার কাজ। অনেক এলাকায় নতুন করে চালু করা হচ্ছে বিনোদনকেন্দ্র। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে কেরানীগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় এবার এসব বিনোদনকেন্দ্রে বাড়তি চাপ পড়তে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার শুঁটকিরটেক এলাকায় সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে বেলনা ইকো রিসোর্ট। প্রকৃতির কাছাকাছি গাছপালায় ঘেরা এক অনন্য পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে এ রিসোর্ট।
বেলনা ইকো রিসোর্টের কর্ণধার ফারদিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাকের হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই রিসোর্ট শহরের কোলাহল থেকে দূরে। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে একটু বিশ্রাম এবং সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা আছে এখানে। শিশুদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রাইডের ব্যবস্থা।’
বাকের হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা মানুষের সুস্থ বিনোদনের কথা মাথায় রেখে এই রিসোর্টটি চালু করেছি। আশা করছি, এবার ঈদুল ফিতরে আমাদের এই রিসোর্টটি ভালো সাড়া ফেলবে। তা ছাড়া, রাজধানীর সঙ্গে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা ভালো থাকায় দূরদূরান্ত থেকে বিনোদনপ্রেমীরা আসবেন এখানে।’
বুড়িগঙ্গা ক্যাফের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ সামনে রাখে আমাদের ক্যাফেটি নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে। ক্যাফেটিতে বিনোদনের পাশাপাশি নদীর সৌন্দর্য অবলোকন করার সুযোগ রয়েছে। উন্মুক্ত পরিবেশে নদীর হিমেল হাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দারুণ সময় কাটানোর সুযোগ রয়েছে এখানে।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা এলাকার বাসিন্দা মো. আলীম বলেন, ‘গেল দুই বছর বাচ্চাকাচ্চাদের নিয়ে ঘরে বসে পানসে ঈদ উদ্যাপন করেছি। এবার দুই মেয়ে বায়না ধরেছে, তাঁদের মাকে নিয়ে ঈদের পরদিন কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন বিনোদন স্পটে ঘোরাফেরা করবে। আশা করছি, এ বছর ঈদ ভালোই কাটবে।’
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, ‘যেহেতু দুই বছর পর মানুষ একটু স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ করতে পারবে, সেহেতু এবার সব বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় বাড়বে। বিনোদনকেন্দ্রে আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করব। পাশাপাশি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকেও নজর থাকবে।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, ‘উপজেলাটি ধীরে ধীরে ক্যাফে-রেস্তোরাঁর নগরীতে পরিণত হচ্ছে। এসব বিনোদনকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যায়। তবে বিনোদন যেন শোকে পরিণত না হয় এবং কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি থাকবে।’