নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর শহরের শংকরপুরের শাওন ওরফে টুনি শাওন হত্যা মামলায় ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে চারজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক। মামলার তদন্ত শেষে গত শনিবার আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিত ভাবে শাওনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা এলাকায় একসঙ্গে চলাফেরা করতেন।
অভিযুক্তরা হলেন শহরের শংকরপুর রেল বস্তির রকিব হাসান অনিক ওরফে অনি, গোলপাতা সমসজিদ এলাকার অভিরাজ শেখ ফিরোজ ওরফে গোল্ডেন ফিরোজ, বটতলা সমজিদ এলাকার নুর হোসেন দিপু, জমাদ্দার পাড়ার মানিক মিয়া, ছোটনের মোড় এলাকার তানভীরুল ইসলাম সুজন, ইসহাক সড়কের জয় ও ঝিকরগাছার ইস্তা গ্রামের হাফিজুর রহমান ভ্যাবো। এ ছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক চারজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২২ জুলাই ঈদের পরদিন রাতে শহরের শংকরপুর জমাদার পাড়ার কলেজ রোডের বাসিন্দা আব্দুল হালিম শেখের ছোট ছেলে শাওন ওরফে টুনি শাওন রাতে বাড়িতে টিভি দেখছিলেন। সাড়ে ৯টার দিকে মানিক ও সুজন তাঁকে কাজ আছে বলে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে নিয়ে যান। সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে সংবাদ আসে শাওন ছুরিকাঘাতে জখম হয়ে ছোটনের মোড়ের কমিউনিটি পুলিশিং অফিসের মধ্যে পড়ে আছে। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন নিহতের বাবা আব্দুল হালিম শেখ ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) শাওন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার ও হত্যায় ব্যবহৃত চাকু, চাইনিজ কুড়াল ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হলে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। তাঁরা হত্যার সঙ্গে জড়িত ও অপর জড়িতদের নাম উল্লেখ করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, নিহত শাওন ও আসামিরা এক সঙ্গে চলাফেরা করতেন। এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে শাওনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গ্রেপ্তার আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকায় ১২ জনকে অভিযুক্ত করে শনিবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।