মন্টি বৈষ্ণব, ঢাকা
আজ ১৪ ডিসেম্বর। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আমাদের ইতিহাসে বেদনাময় একটি দিন। দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রাক্কালে জাতি হারিয়েছে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৪ বা ১৫ ডিসেম্বর সকালে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা। চোখ, হাত বেঁধে ধরে নিয়ে তাঁদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে সংঘটিত হয়েছিল এ হত্যাযজ্ঞ।
দেশের সেই মেধাবী মানুষদের একজন সাংবাদিক সেলিনা পারভীন। দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর। দেশ স্বাধীন হওয়ার বাকি ছিল আর মাত্র ৩ দিন। সেলিনা পারভীন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরীতে। সেদিন ওই বাসার দরজায় কড়া নাড়ে আলবদর বাহিনীর কয়েকজন। তিনি নিজেই বাসার দরজা খুলে দেন। দরজা খুলতেই আলবদর বাহিনী তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে নিয়ে যায়। পরে সেলিনা পারভীনের বেয়নেটে ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে। শীতকাতুরে সেলিনা পারভীনের পায়ে সাদা মোজা দেখে তাঁর মৃতদেহ শনাক্ত করা হয়েছিল।
সেলিনা পারভীন ১৯৩১ সালে নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সেলিনা পারভীন। ‘শিলালিপি’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ছিল শিলালিপি। পত্রিকাটি বিক্রির অর্থ দিয়ে তিনি সেই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের ওষুধ, অর্থ, খাবার দিয়ে সহযোগিতা করতেন। ঘটনাক্রমে শিলালিপির প্রকাশিত সব সংখ্যা নিষিদ্ধ করেছিল পাকিস্তান সরকার।