যশোর প্রতিনিধি
করোনা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় যশোরের নাম থাকলেও সচেতনতা বাড়েনি জনসাধারণের। আগের মতোই বাজার-ঘাট ও পরিবহনে মাস্ক ছাড়াই ঘোরাফেরা করছেন নগরের অধিকাংশ বাসিন্দা। তবে এখনই জেল-জরিমানার মতো কঠোর অবস্থানে যেতে চাচ্ছে না জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। তাঁরা বলছেন, প্রথমে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চালানো হবে। তাতে কাজ না হলে, তবেই তাঁরা জেল-জরিমানার পদক্ষেপ নেবেন।
বেনাপোল বন্দর ও সদর হাসপাতাল ঘিরে বিভিন্ন জেলার মানুষের যাতায়াত রয়েছে যশোরে। এসবের কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি এ জেলার জন্য।
এ দিকে যশোরে করোনা নমুনা সংগ্রহ কমেছে। তবে সংক্রমণের হার প্রায় একই আছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও জেলায় শনাক্তের হার ছিল ৩৫.৩০ শতাংশ।
যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার পাওয়া সর্বশেষ ফলাফলে জেলায় ১৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের পজিটিভ এসেছে। বুধবার এ সংখ্যা ছিল ২০৪ জনের নমুনার বিপরীতে ৭৫ জন। শনাক্তের হার ছিল ৩৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ। বৃহস্পতিবার এ হার ১.৪৬ শতাংশ কমলেও এ দিন নমুনার সংখ্যা ১৭টি কম ছিল।
যশোর সিভিল সার্জনের মুখপাত্র ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিনোম সেন্টার থেকে ৯০টি নমুনাতে ২৭ জন, র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ৯০ নমুনায় ৩৯ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। তবে জিন এক্সপার্টের পাঁচটির সব কটিতেই নেগেটিভ এসেছে। এর মধ্যে যশোর সদরে সবচেয়ে বেশি ৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া ঝিকরগাছায় ১২, শার্শায় ৬, কেশবপুরে ৪ এবং চৌগাছা ও মনিরামপুরে ১ জন করে রয়েছেন।
ডা. রেহেনেওয়াজ আরও জানান, যশোরে এ পর্যন্ত ২২ হাজার ৩০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২১ হাজার ৩৯২ জন।
এ দিকে বৃহস্পতিবারও প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের মাঝে বিধিনিষেধ মানার ব্যাপারে উদাসীনতা দেখা গেছে। এদিনও রাস্তাঘাট, দোকানপাট, অফিস-আদালতে সাধারণ মানুষের অসচেতন অবস্থান ছিল চোখে পড়ার মতো।
ব্যবসায়ী নাজমুল কবির বলেন, ‘গত লকডাউনে সাধারণ ব্যবসায়ীরা চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছিলেন। যে ধাক্কা এখনো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। সেখান থেকে মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত। এবারও যদি তাঁরা আগে ভাগেই সচেতন না হন, তাহলে আমাদের জন্য সংকটময় পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে, যা গোটা দেশের মানুষের ওপরই বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গেই কথা বলছি। তাঁদের সচেতনতা হতে উদ্বুদ্ধ করছি। আমরা এখনো পর্যন্ত চাচ্ছি না, জনসাধারণের সঙ্গে কঠোরতা অবলম্বন করতে।’