গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
আষাঢ় ও শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। আষাঢ়ে তেমন না হলেও শ্রাবণে কিছুটা বৃষ্টির দেখা মিলছে। যে কারণে ছাতা ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। অনেকে নতুন ছাতা কিনছে, আবার অনেকে পুরোনো ছাতাটি মেরামত করছে। পুরোনো ছাতা মেরামত করায় ব্যস্ততা বেড়েছে ছাতার কারিগরদের।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ছাতার কারিগরদের বেশ ব্যস্ত দেখা গেছে। মানুষজন ভিড় করছে পুরোনো ছাতা মেরামত করতে। কারিগর আক্কাস আলী বলেন, বছরের চার মাস তিনি এ পেশায় থাকেন।
প্রত্যেক সোমবার সালটিয়া হাটে ছাতা মেরামতের কাজ করেন। প্রতি হাটবারে ১৫টির মতো ছাতা মেরামত করে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা রোজগার হয়। এছাড়া প্রতিদিন আশপাশের কোনো হাটে গিয়ে ছাতা মেরামতের কাজ করেন।
কারিগর ইসমাইল বলেন, ‘দেড় শ বছরের পুরোনো এই সালটিয়া হাটে বাবা কাজ করেছেন ৪০ বছর। এখন আমিও একই পেশায় আছি ২০ বছর ধরে। তবে আগের মতো আর রোজগার নেই। ছাতা মেরামতের পাশাপাশি টর্চ লাইট, গ্যাস ম্যাচ মেরামতের কাজ করি। এতে করে হাটবারে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা আয় হয়।’
ছাতা মেরামত করতে আসা সত্তোর্ধ্ব আয়ুব আলী মৃধা বলেন, ‘এখনো কাঠের ডাঁটিওয়ালা ছাতাই ব্যবহার করি। রোদ-বৃষ্টিতে ব্যবহার করতে গিয়ে বছরে একবার সারাই করতে হয়।’
পৌর এলাকার নাসির উদ্দিন ব্যাগে ভরে চারটি ছাতা নিয়ে এসেছেন সালটিয়া হাটে কারিগরের দোকানে। তিনি বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী চাকরিজীবী, ছেলে-মেয়ে স্কুল-কলেজে পড়ে। বৃষ্টিতে ছাতা ছাড়া চলাফেরা দায়। বর্ষা গেলে ছাতার খোঁজ থাকে না। ঘরে অযত্নে পড়ে নষ্ট হয়েছে। এখন সবগুলো ২০০ টাকায় মেরামত করে নিয়েছি।’
ছাতার কারিগরেরা আরও বলেন, ‘নতুন কেউ এখন আর এ পেশায় আসতে চায় না। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। যাঁরা আছেন, বছরে চার থেকে ছয় মাস এ পেশায় কাজ থাকে। বাকি সময় ভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকেন। তাঁদের মতে, দেশি ছাতার ব্যবহার কমেছে, বেড়েছে ফোল্ডিং ছাতার কদর। আকর্ষণীয় ডিজাইন, বাহারি রঙের হাল ফ্যাশনের ছাতার ব্যবহার বেশি।