রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে কথা বলায় কৃষক লীগের এক নেত্রীকে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার ভুক্তভোগী নারী রাজশাহী শহরের এক রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তোলেন।
এই নারীর নাম শেখ হাবিবা। তিনি মোহনপুর উপজেলার ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। উপজেলা কৃষক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক তিনি। সংবাদ সম্মেলনে হাবিবার স্বামী মাসুদ রানা ও মা সাবেক ইউপি সদস্য মিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
১৯ জুলাই থানায় গেলে শেখ হাবিবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। এর একটির বাদী পুলিশ। এতে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। অন্য মামলার বাদী এক নারী। সেই মামলায় হাবিবার বিরুদ্ধে দেড় লাখ টাকা প্রতারণা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। পরদিন হাবিবাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কিছুদিন কারাভোগ করার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে হাবিবা সংবাদ সম্মেলন করলেন।
হাবিবা বলেন, তিনি এক নারীর বাচ্চা উদ্ধারের জন্য তাঁর সঙ্গে ১৯ জুলাই থানায় যান। এ সময় পুলিশ জানায়, তাঁর কাজ করতে এমপির নিষেধ আছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেদিন থানায় দুই নারী কনস্টেবল হাবিবাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর ওসির কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে পাশের এসআইদের রুমে নিয়ে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় তাঁকে।
শেখ হাবিবা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, গত মার্চে একটি জাতীয় পত্রিকা ও একটি টেলিভিশন চ্যানেলে তাঁর বক্তব্য প্রচারিত হয়। সেখানে তিনি এমপি আয়েন উদ্দিনকে রাজাকারপুত্র, মানুষের জমি দখলকারী বলেন। এই সাক্ষাৎকার দেওয়ায় এমপি আয়েন উদ্দিন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে পুলিশ দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছেন। হাবিবা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং এমপি আয়েনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোহনপুর থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সময় এমপি স্যার সিঙ্গাপুরে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না। হাবিবাকে মারধর করা হয়নি। নির্যাতনের অভিযোগ একেবারেই মিথ্যা।’
এ বিষয়ে জানতে এমপি আয়েনের মোবাইল ফোনে কল করা হলে ফোনটি রিসিভ করা হয়নি। এই প্রতিবেদকের পরিচয় দিয়ে বক্তব্য প্রয়োজন জানিয়ে এসএমএস পাঠানো হলেও সাড়া মেলেনি।
এমপি আয়েনের সাবেক পিএস একরামুল হক বিজয় বলেন, এসব মিথ্যা কথা। ইউনিয়নের বাসিন্দা হিসেবে হাবিবাকে তিনি চেনেন। তিনি মামলা করা ওই নারীকেও চেনেন। সেদিন একটা সামাজিক কাজে থানায় গিয়েছিলেন। সেখানে দুজনকে দেখতে পান। তাঁরা কেন থানায় ছিলেন, তিনি সেটা জানেন না।