রাজবাড়ী প্রতিনিধি
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করছে তিন চাকার যান। অবাধে এসব যান চলাচলের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। মহাসড়কে তিন চাকার যান বন্ধে প্রশাসন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার। সড়কটি তিন চাকার যানের দখলে। মহাসড়কে এসব যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অবাধে চলছে এসব যান। সড়কটি নিজেদের দখলে রাখতে দ্রুতগামী পরিবহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই চলছে ইঞ্জিনচালিত নছিমন, করিমন, ভটভটি, আলমসাধু, ইজিবাইক, অটোরিকশা, অটোভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন। এ ছাড়া চলছে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলও।
কুষ্টিয়া-দৌলতদিয়াগামী পদ্মা-গড়াই পরিবহনের চালক মামুন বলেন, ‘আমাদের গাড়ি চালাতে খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। মহাসড়কে এসব তিন চাকার চালকেরা কোনো সিগন্যাল মানে না। ফলে আমাদের গাড়ি চালাতে বিভ্রান্তের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।’
আব্দুর রহিম নামে আরেক চালক বলেন, ‘ছোট গাড়ির জন্য খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। নছিমন, করিমনের প্রচণ্ড শব্দ হয়। হর্ন দিলেও সাইড দিতে চায় না। আর যারা গাড়ি চালায় তাদের নেই কোনো অভিজ্ঞতা। মহাসড়কে চলাচলের সময় ওই সব গাড়ি ডানে যাবে না বামে, সেটা বোঝার উপায় থাকে না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে।’
কুদ্দুস নামে এক ট্রাকচালক বলেন, তিন চাকার যানবাহনগুলো কোনো আইন মানে না। মহাসড়কে উঠেই প্রচণ্ড গতিতে গাড়ি চালায়। সেই সঙ্গে মোটরসাইকেলের জন্যও দুর্ঘটনা ঘটে। কেউ সিগন্যাল মানতে চায় না। দুর্ঘটনা রোধের জন্য মহাসড়ক থেকে তিন চাকার এসব যানবাহন বন্ধ করতে হবে।
ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার যান মাহিন্দ্রচালক জলিল মোল্লা বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে মহাসড়কে এই যানবাহন চালাই। সারা দিন যে কয় টাকা ইনকাম হয়, তা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। মহাসড়কে উঠলে পুলিশে ধরে, মামলা দেয়। কিন্তু তারপরও বাধ্য হয়ে চালাতে হয়।’
নছিমনচালক মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘মহাসড়কে নছিমন চলাচল নিষিদ্ধ জেনেও চলাচল করতে হয়। এখন গ্রামের একজন কৃষক তার পাট নিয়ে শহরের হাটে যাবে, সে তো আর ট্রাকে করে নিতে পারবে না। তাকে পাট নিয়ে যেতে হলে নছিমন বা ভ্যানেই যেতে হবে। গ্রাম থেকে শহরে আসলে মহাসড়কে উঠেই হাটে আসতে হবে; তা ছাড়া হাটে যাওয়ার কোনো পথ নেই।’
পাংশা হাইওয়ে ওসি মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামান বলেন, মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন যাতে চলাচল না করতে পারে, তার জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ যানবাহনগুলো আটক করে মামলাও দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গত আট মাসে পাংশা হাইওয়ে থানার অধীনে তিনটি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছে।