শাহরিয়ার নাফীস
আরও একটি ‘অল অস্ট্রেলিয়া’ মহারণ দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। দুটি দলই একই মহাদেশের। একই রকম উইকেটে খেলে অভ্যস্ত। অন্য মহাদেশের উইকেটে দুই দেশের লড়াইটা সমানে সমানেই হবে।
আরেকটি বিষয়—তাসমান সাগরের দুই পারের দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিন্তু আগের সেই স্বাভাবিক বিষয় নিয়ে। এখন ভারত-পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের খেলা নিয়ে দর্শক-ভক্তদের মধ্যে যেমন আলাদা উত্তেজনা, সেটির মতো অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের খেলাতেও এখন বেশ উত্তেজনা দেখা যায়।
দুই দলকে বিশ্লেষণ করে একটা জিনিসই দেখছি। দুই দলই কিন্তু দুর্দান্ত সব ক্রিকেটীয়মুহূর্ত উপহার দিয়ে ফাইনালে উঠেছে। বিশ্বকাপের শুরুতে দুই দলকে কেউ ফেবারিটের খাতায় রাখেনি। তবে সময় যত গড়িয়েছে দুই দলই পেখম মেলে উড়েছে সামনের পথে।
দুটি দলের এই লড়াইয়ে কে ফেবারিট—বলা বেশ কঠিনই। তবে দল হিসেবে সূক্ষ্মভাবে হয়তো অস্ট্রেলিয়া একটু এগিয়ে থাকবে। অজিদের নামের ওজনটাও তো বেশ ভারীই, অতীতে বিশ্বমঞ্চে একের পর এক শিরোপাজয়ের প্রেরণা কিন্তু তাদের সঙ্গে থাকবে। অস্ট্রেলিয়া দলটার আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো—এত দিন বলতে গেলে তাদের মিডল অর্ডারটা ঘুমিয়েই ছিল। সেই মিডল অর্ডারই কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে জিতিয়ে দিল। টুর্নামেন্টের শেষের দিকে এসে দলটার সবাই জ্বলে উঠেছে। সবাই যখন উজ্জীবিত থাকে, তখন হারানো কঠিনই।
আবার নিউজিল্যান্ডকে কীভাবে পিছিয়ে রাখি? সাম্প্রতিককালের আইসিসির টুর্নামেন্টে কিউইদের পারফরম্যান্সই সবচেয়ে ধারাবাহিক। সর্বশেষ তিন আইসিসি ট্রফির তিনটিতেই ফাইনালে খেলছে কেন উইলিয়ামসনের দল। সেই ইতিহাসটা তাদের পক্ষে তো থাকছেই। সব মিলিয়ে অসাধারণ দুটি দলের মধ্যেই ফাইনালটা হচ্ছে।
তবে অস্ট্রেলিয়া সেট দলটাকে ফাইনালেও পাচ্ছে। সেখানে ডেভন কনওয়ের মতো দুর্দান্ত এক ক্রিকেটারকে হারানো নিউজিল্যান্ডের জন্য বড় ধাক্কা। লড়াইটা দুই দুর্দান্ত অধিনায়কেরও। উইলিয়ামসন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। অন্যদিকে অ্যারন ফিঞ্চও একটা বিপর্যয়ের পর দলটাকে গুছিয়েছে। দুই সেরা মস্তিষ্ক ফাইনালে দলকে কীভাবে পথ দেখায় সেটি দেখার অপেক্ষায় থাকব।
ফাইনালে টসটাও বড় ফ্যাক্টর হতে পারে ফাইনালে। এখন পর্যন্ত আমরা বিশ্বকাপে দেখেছি যারা পরে ব্যাটিং করেছে তারাই এগিয়ে ছিল। হয়তো সেই সহজ সমীকরণ মেনে আগে যে টস জিতবে তারা বোলিংই নেবে। সমীকরণ মিলুক, সমস্যা নেই—আমরা একটা দুর্দান্ত ক্রিকেট ম্যাচই দেখব, সেই আশা তো অন্তত করতেই পারি।