সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী)
বড়াল নদের রাজশাহীর চারঘাট অংশে নিষিদ্ধ সুতি জাল ও চায়না ম্যাজিক কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ছোট-বড় ডিমওয়ালা মাছ শিকার করা হচ্ছে।
উজাড় করা হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত এ অঞ্চলের মৎস্যসম্পদ। এভাবে অবাধে ডিমওয়ালা মাছ ও পোনা ধরলে মাছের অভাব চরম আকার ধারণ করবে বলে মনে করছেন প্রকৃত জেলেরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মার শাখা বড়াল নদ সারাবছর পানিশূন্য থাকলেও বছরের এ সময়ে থাকে পানিতে টইটুম্বুর। এ বছর বর্ষার পানিতে টইটুম্বুর হওয়ার আগেই চারঘাটে বড়াল নদের বিভিন্ন জায়গা ছেয়ে গেছে চায়না ম্যাজিক কারেন্ট জাল ও নিষিদ্ধ সুতি জালে। এসব জাল দিয়ে প্রাকৃতিক উৎসে ডিম দিতে আসা মা মাছ ও পোনা নিধন করছেন অসাধু জেলেরা।
মৎস্য অফিস বলছে, নিষিদ্ধ সুতি জাল ও চায়না ম্যাজিক কারেন্ট জাল সর্বনাশা, এটা বন্ধ করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
সরেজমিন উপজেলার কালুহাটি, রামচন্দ্রপুর, পুঠিমারী এলাকায় বড়াল নদের বিভিন্ন জায়গায় চায়না ও নিষিদ্ধ সুতি জাল পেতে মাছ ধরতে দেখা গেছে। জাল ব্যবহারকারীরা বলছেন, এমন কোনো মাছ নেই, যা সুতি জালে ধরা পড়ে না। অন্য জালে মাছ না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে তাঁরা এসব জাল ব্যবহার করছেন।
কালুহাটি এলাকায় চায়না দুয়ারি ও নিষিদ্ধ সুতি জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন পলাশ হালদার। তাঁর ঝুড়িতে ছোট পোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দেখা যায়। এসব মাছের অধিকাংশই ডিমওয়ালা। ডিমওয়ালা মাছ ধরা ঠিক কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অন্য জালে মাছ না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে এ জাল পেতেছি।’
পুঠিমারী গ্রামের আব্দুল আজিজ ২২ বছর থেকে বড়াল নদে মাছ ধরেন। তিনি বলেন, যারা প্রকৃত জেলে কিংবা মাছ ধরা যাদের বংশগত পেশা, তারা কখনো এই চায়না কিংবা নিষিদ্ধ সুতি জাল দিয়ে মাছ ধরবেন না। শুধু মৌসুমি শিকারিরাই এমন সর্বনাশা কাজ করছেন। এতে প্রকৃত জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ মোল্লাহ বলেন, এ মৌসুমে বড়ালে দেরিতে পানি এসেছে। তবে নদ-নদীতে সব সময়ই নজরদারি আছে। খোঁজখবর নিয়ে নিষিদ্ধ এসব জাল বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।