পঞ্চগড় প্রতিনিধি
নির্মাণশিল্পে চাহিদা থাকায় পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন নদ-নদী থেকে সিলিকা বালু তোলার পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু সঠিক উদ্যোগের অভাবে এই বালু থেকে রাজস্ব কম আদায় হচ্ছে সরকারের। সুবিধাভোগী মহলের মদদে এই বালু চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
ভারত থেকে আসা ৪৫টি নদ-নদী পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। এসব নদ-নদী থেকে প্রতিদিন সিলিকা বালু তোলা হচ্ছে। তবে এর সুফল ভোগ করছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা। সরকারিভাবে এই সম্পদের সুষ্ঠু সংরক্ষণ এবং বিপণন করা গেলে জাতীয় রাজস্ব আহরণ বাড়বে বলে মনে করেন জেলার সচেতন মানুষ।
বালু ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার সঠিকভাবে উদ্যোগ নিলে সিলিকা বালু থেকে বেশি লাভ করা সম্ভব। এর পাশাপাশি এই বালু দেশের বাইরেও পাঠানো যাবে বলে তাঁরা মনে করেন।
পঞ্চগড়ের পাথর-বালু ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য আবু সালেক বলেন, ‘যে যার মতো বালু তোলায় সরকার রাজস্ব কম পাচ্ছে। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে বালু তোলা হলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি সরকারের রাজস্বও বাড়বে।’
পঞ্চগড়ে জলবায়ু এবং নদী শাসন নিয়ে কাজ করছেন অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ ঠিক রেখে জেলায় বালু ও পাথরভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে পারলে সরকারি রাজস্ব বাড়বে। এ জন্য জাতীয় স্বার্থে সুবিধাভোগীদের প্রতিহত করা জরুরি।’
পরিবেশ ও সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন ‘পরস্পর’-এর নির্বাহী পরিচালক আকতারুন নাহার সাকি। তিনি বলেন, ‘জেলায় অর্ধশতাধিক সরকারি বালুমহাল রয়েছে। প্রতিবছর জেলা প্রশাসন এসব বালুমহাল ইজারা দিয়ে থাকে। পাথর-বালুভিত্তিক কিছু সংগঠন সিন্ডিকেট করে নামমাত্র মূল্যে এসব বালুমহাল ডেকে লাখ লাখ টাকা আয় করছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় পরিবেশ বিপন্ন হতে বসেছে। সরকারের সঠিক পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন।’
এছাড়া, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সিলিকা বালু দেশের অর্থনীতিতে আরও ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন পঞ্চগড় পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামসুজ্জামান।
এ বিষয়ে পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু সংরক্ষণ ও বিপণন নিয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকৌশলীদের দেওয়া তথ্য ইতিমধ্যে প্রস্তাব আকারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সিলিকা বালু ঘিরে এলাকায় বাণিজ্যিক ক্ষেত্র তৈরি করতে পারলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থান বাড়ার পাশাপাশি বেশি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে।