ফরিদ খান মিন্টু, শরণখোলা (বাগেরহাট)
মাঝখানে বৃত্তাকার ছায়া সুনিবিড় গ্রাম। চারপাশে প্রশস্ত খাল। তাই গ্রামটির নাম দ্বীপচর। গ্রামটিতে তিন শতাধিক পরিবারের বসবাস। এখানে আছে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মসজিদ। আর আছে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি। গ্রামের চারপাশের খালগুলো স্বাদু পানিতে ভরে থাকায় এখানের মানুষ যার যার জমিতে সারা বছর নানা রকমের চাষাবাদে ব্যস্ত থাকেন।
সারা বছর এ গ্রামে কোনো না কোনো ফসল ফলানোর জন্য দ্বীপচর গ্রামটি উপজেলার কৃষিপল্লি হিসেবে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে।
এই দ্বীপচর থেকে লোকালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য প্রধান মাধ্যম ১৫০ ফুট লম্বা একটি স্লিপার সেতু। যার মাধ্যমে এখানকার মানুষ রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা গ্রাম হয়ে উপজেলা সদরে আসা যাওয়া করতেন। তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পাঠানো হতো উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার ও পার্শ্ববর্তী বাংলাবাজার। এসব বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা কৃষিপণ্য কেনার জন্য যেত কৃষি পল্লি দ্বীপচরে।
স্লিপার সেতুটি ভেঙে দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অযোগ্য হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে দ্বীপচরবাসী। কৃষিপণ্য পরিবহন দূরের কথা, সাধারণ মানুষের চলাচলও দুরূহ হয়ে পড়েছে।
দ্বীপচর গ্রামের কৃষক ফজলু কারি ও রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁদের চলাচলের সেতুটি ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে। তাই তাঁদের কৃষিপণ্য বাজারে পাঠাতে পারছেন না। ফলে উপযুক্ত দাম না পেয়ে অনেকেই ক্ষতির মুখে পড়ে চাষাবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন। গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়াও কষ্টসাধ্য।
সমাজসেবক মনির সওদাগর বলেন, কয়েক দিন আগে গ্রামের মানুষ নিজেদের খরচে ভাঙা সেতুর কিছু অংশে কাঠ দিয়ে মেরামত করেছিল, তাও আবার ভেঙে পড়েছে।
সমাজসেবক মোফাজ্জেল হোসেন সওদাগর ও বাচ্চু তালুকদার বলেন, একটি সেতুর অভাবে এ গ্রামটির মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে এ সেতুটি চলাচলের অযোগ্য। এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
এই গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেক্সোনা দেলোয়ার বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সারা দেশে উন্নয়নের মহা উৎসব চলছে। ঠিক সেই সময় এই সেতুটির এ দুরবস্থা দুঃখজনক।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নাসিমুল আহসান তালুকদার জনগণের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরে খাদা ও দ্বীপচরের খালে জরুরি ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী ফেরদৌস আহম্মেদ বলেন, সংস্কার না হওয়ায় ১৫০ ফুট স্লিপার সেতুটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।