মাদারীপুর প্রতিনিধি
দীর্ঘ দুই যুগ ধরে মাদারীপুরে প্রসূতিদের চিকিৎসাসেবায় ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দিলরুবা ফেরদৌস। চিকিৎসার অভাবে মা হতে পারছেন না, আবার টাকার অভাবে যেসব প্রসূতির চিকিৎসা আটকে রয়েছে—এমন নারীর কাছে প্রথম পছন্দের চিকিৎসক দিলরুবা। মাদারীপুরের আছমত আলী খান সেন্ট্রাল হাসপাতালে দিলরুবার চেম্বারে সারা বছর ভিড় লেগেই থাকে নারীদের।
দীর্ঘ সময় নিয়ে রোগীদের কাছ থেকে সমস্যার কথা শোনেন দিলরুবা। গরিব রোগীদের বিনা মূল্যে দেন চিকিৎসাপত্র। অনেক সময় ওষুধ কেনার অর্থ দিয়ে দেন। অন্যদের মতো ফি নির্ধারণ করেননি তিনি। সামর্থ্য অনুযায়ী রোগীরা যে যা পারেন তা-ই হাসিমুখে নেন তিনি।
তানমিরা জেবু নামের এক নারী বলেন, ‘যখন প্রথম মা হই, তখন তাঁর (দিলরুবা) কাছেই যাই। প্রসব ব্যথায় আমার কষ্ট দেখে স্বজনেরা অস্ত্রোপচার করতে বলেন। কিন্তু ডা. দিলরুবা তা করেননি। পরে স্বাভাবিক নিয়মেই আমার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের শকুনী এলাকার এক নারী বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে আমার কোনো সন্তান হচ্ছিল না। পরে ডা. দিলরুবা ফেরদৌসের চিকিৎসায় মা হতে পেরেছি। এখন আমার দুই সন্তান।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বাসিন্দা ডা. দিলরুবা। তাঁর শ্বশুরবাড়ি যশোর শহরে। দিলরুবার স্বামী এস এম আলীমুর রেজাও চিকিৎসক ছিলেন। ২০১৪ সালে স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। দিলরুবা বর্তমানে ঢাকার মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত। সপ্তাহে দুদিন বসেন মাদারীপুর শহরের আছমত আলী খান সেন্ট্রাল হাসপাতালে। এমবিবিএস, এমসিপিএস, ডিজিও ডিগ্রিধারী দিলরুবা জরায়ুর ক্যানসার নিয়েও কাজ করছেন। এর আগে, ১৯৯৯ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাদারীপুরের মা ও শিশুকল্যাণকেন্দ্রে স্বামী আলীমুর রেজার সঙ্গে একত্রে কাজ করেছেন দিলরুবা।
দিলরুবা ফেরদৌস বলেন, ‘স্বামীর কাছ থেকেই মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি। তাঁর কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আজও গরিব মানুষকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি নানাভাবে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছি। আজীবন এ কাজগুলো করে যাব।’