গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্ত্রোপচার আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। ৯ অক্টোবর থেকে জেনারেটর সংকটের কারণে অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয়। প্রায় এক যুগ পর গত ১৫ আগস্ট হাসপাতালে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। শুরুর ১ মাস ২৫ দিন পর পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল রোববার সকালে হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, ৯ অক্টোবর রোববার একটি অপারেশন চলাকালে বিদ্যুৎ চলে যায়। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এতে সমস্যা দেখা দেয়। অপারেশনটি সফলভাবে সমাপ্ত হলেও পরবর্তী সময়ে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকি মনে হওয়ায় তা বন্ধ রাখা হয়। চালু হওয়ার পর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৯টি অস্ত্রোপচার হয়।
গর্ভবতী মেয়েকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডেলিভারি করাতে ইচ্ছা পোষণ করেন মেহেদী হাসান আক্কাস। তিনি বলেন, রোববার ১১টার দিকে তাঁর মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে পরামর্শের জন্য যান। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা (জেনারেটর) না থাকায় অস্ত্রোপচার হবে না।
মেহেদী হাসান আক্কাস বলেন, ‘আমার মেয়ের ১১ অক্টোবর ডেলিভারির তারিখ দেন চিকিৎসক তৃপ্তি সরকার। সেই তারিখে নেওয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আরও ৫ দিন পরে সিজার করবেন বলে ডাক্তার জানান। ঠিক ৫ দিন পর গতকাল হাসপাতালে এলে ডাক্তার জেনারেটর সংকটে অপারেশন করা যাবে না বলে জানান।’
গাইনি কনসালট্যান্ট তৃপ্তি সরকার বলেন, ‘গত সপ্তাহে একটি সিজার করার সময় বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় অপারেশন বাধাগ্রস্ত হয়। তারপরও সফলভাবে অপারেশনটি সমাপ্ত করা হয়। কিন্তু অপারেশন চলাকালীন বিশেষ কোনো মুহূর্তে যদি বিদ্যুৎ না থাকে, তাহলে হয়তো গর্ভবতীর জীবন বাঁচাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। এমনটা ভেবেই অস্ত্রোপচার সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা হলেই পুনরায় অস্ত্রোপচার করা হবে।’
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা শাহ মো. শরিফ বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে যোগদান করার পর থেকে চেষ্টা চালিয়েছি অস্ত্রোপচার চালু করার। সফলভাবে প্রায় এক যুগ পর সিজারিয়ান সেকশন গত ১৫ আগস্ট চালু করা হয়। গত সপ্তাহেও একটি অপারেশন করা হয়েছে। অপারেশন চলাকালে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। ১০ মিনিট বিদ্যুৎ না থাকায় তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে অপারেশনটি সফলভাবেই শেষ করা হয়। জেনারেটর সংকটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে অপারেশন করা সম্ভব নয় বলে এ সপ্তাহ থেকে সিজারিয়ান সেকশন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে।’
শাহ মো. শরিফ আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে এলজিইডিকে জানানো হয়েছে। আশা করি এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই জেনারেটরের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। পুনরায় অপারেশন বিভাগ নিয়মিত চালু থাকবে।