ফেনী প্রতিনিধি
২১ জুলাই। কোটা সংস্কার আন্দোলনে তখন উত্তাল দেশ। এর মধ্যে আট বছর বয়সী ছেলে ফারহানকে নিয়ে রাজধানীর আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় ঘুরতে বের হন আবু বক্কর ছিদ্দিক শিবলু। হঠাৎ শুরু হয় গোলযোগ। তাড়াহুড়ো করে ফেরার সময় মাথার বাম পাশে গুলি লাগে শিবলুর। চার দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় ২৪ জুলাই মারা যান তিনি। তাঁর এমন মৃত্যুতে স্বজন ও প্রতিবেশীরা স্তব্ধ হয়ে যান।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার ইয়াকুবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঁনপুর এলাকার মৃত আবুল হাসেমের ছোট ছেলে ছিলেন শিবলু।
রাজধানীতে একটি কোম্পানিতে সহকারী হিসাবরক্ষক পদে চাকরির সুবাদে উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতেন তিনি। ফারহান ছিদ্দিক (৮) এবং নুসাইবা ছিদ্দিক (১০ মাস) নামের দুই সন্তান রয়েছে তাঁর।
শিবলুর বড় ভাই আবদুল হাকিম বাবলু ইয়াকুবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। বাবলু জানান, ঘটনার দিন ছেলে ফারহানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিল শিবলু। আবদুল্লাহপুর রেলগেট এলাকায় বসেছিল বাবা-ছেলে। গোলযোগ শুরু হলে তারা বাসা ফেরার জন্য উঠে দাঁড়ালে হঠাৎ শিবলুর মাথার বাম পাশে গুলি লাগে। আশপাশের লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসক আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে পাঠান। অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ২৪ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসক শিবলুকে মৃত ঘোষণা করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুলাই সন্ধ্যার দিকে শিবলুর লাশ নিয়ে দাগনভূঞার গ্রামের বাড়ি ফেরেন স্বজনেরা। ওই দিন রাতেই তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।
এ বিষয়ে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসিম বলেন, ‘রাজধানীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় শিবলু নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। বৃহস্পতিবার লাশ নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।’