আবদুল আযীয কাসেমি
ইসলাম সব সময় জ্ঞানার্জনে উৎসাহ দেয়। নবী (সা.)-এর কাছে প্রথম যে অহি এসেছে তা হলো, ‘পড়ো তোমার প্রতিপালকের নামে।’ এখানে যে পড়ার এবং জ্ঞানার্জনের কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে সবার আগে থাকবে ধর্মীয় জ্ঞান। যেমনটি হাদিসে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।’ (ইবনে মাজাহ: ২২৪)
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় হাদিস বিশারদেরা বিস্তর আলাপ করেছেন। সংক্ষেপে বিষয়টি যদি আমরা ব্যাখ্যা করি, তাহলে বলতে হবে যে বিধানের দিক থেকে ধর্মীয় জ্ঞান দুই প্রকার।
এক. ফরজে কেফায়া তথা যা কিছু মানুষ আদায় করলে বাকিদের পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। দুই. ফরজে আইন তথা যা অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক।
যে জ্ঞান শেখা ফরজে কেফায়া, তার উদাহরণ হলো—কোরআন, সুন্নাহ ও ইসলামি জ্ঞানের বিভিন্ন শাস্ত্রে পাণ্ডিত্য অর্জন করা, ধর্মীয় নানা বিষয়ে ও সংকটে সমাধান দিতে পারা। এই জ্ঞান অর্জন করা সবার জন্য আবশ্যক না হলেও মুসলমানদের মধ্যে এ বিষয়ের পণ্ডিত ও বিশেষজ্ঞ থাকা আবশ্যক। যদি কোনো অঞ্চলে একজনও এমন ব্যক্তি না থাকেন, তাহলে সেখানকার সবাই গুনাহগার হবেন। কারণ এমন ব্যক্তির অনুপস্থিতির কারণে সমাজে কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়বে। ফলে ইসলামের আসল রূপটাই মানুষের মানসপট থেকে হারিয়ে যাবে।
আরেক প্রকার জ্ঞান হলো ফরজে আইন, অর্থাৎ যা না জানলেই নয়। প্রত্যেক মুসলমানকেই তা জানতে হবে। যেমন আকিদা-বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়গুলো। যেমন আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ, নবীজির নবুয়ত ও সর্বশেষ নবী হওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা।
একইভাবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকেই পবিত্রতা, নামাজ, রোজা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজন পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করা সবার জন্য আবশ্যক। এ ছাড়া সব পেশার মানুষকে তার পেশা-সম্পর্কিত ইসলামের বিধানগুলো জানতে হবে।
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক