ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান
বর্তমান সমাজব্যবস্থায় যত নিন্দনীয় অপরাধ আছে, এর মধ্যে প্রতারণা একটি। এ মন্দ কাজটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। প্রতারকেরা সব সময় সর্বত্র প্রতারণা করার চেষ্টা করে। এটি একটি ঘৃণিত ব্যাধি এবং বহু ব্যাধির মূল। প্রতারণার কারণে মানুষ পরস্পর ঝগড়া-বিবাদে লিপ্ত হয়, ফলে নষ্ট হয় বন্ধুত্ব ও সামাজিক শান্তিশৃঙ্খলা।
প্রতারণা ইসলামে নিষিদ্ধ। কেউ প্রতারণা করলে সে বড় গুনাহগার হয়। হাদিসে বর্ণিত আছে, একদিন মহানবী (সা.) কোনো খাদ্যবস্তুর স্তূপের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেটির ভেতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে তার মধ্যে ভেজা খাদ্যশস্য পেলেন। তখন তিনি বললেন, ‘হে খাদ্যের মালিক, এটি কী?’ সে বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, বৃষ্টির কারণে এমন হয়েছে।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘তুমি ভেজা খাদ্যশস্য ওপরে রাখলে না কেন? যা ক্রেতা দেখতে পেত এবং প্রতারিত হতো না। জেনে রাখো, যে প্রতারণা করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।’ আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই মহানবী (সা.) প্রতারণামূলক বেচাকেনা করতে নিষেধ করেছেন।’
যারা প্রতারণা করে, তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় শাস্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের জন্য ধ্বংস, যারা মাপে কম করে, যারা লোকের কাছ থেকে যখন মেপে নেয়, তখন পূর্ণমাত্রায় নেয় এবং যখন লোকজনকে মেপে দেয় কিংবা ওজন করে দেয় তখন কম করে দেয়।’ (সুরা তাতফিফ: ১-৩)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যখন কোনো জাতির মধ্যে ধোঁকা ও প্রতারণা প্রকাশ পায়, তখন আল্লাহ ওই জাতির অন্তরে ভীতির সঞ্চার করেন। আর যখন কোনো জাতি পরিমাপ ও ওজনে কম দেয়, তখন সেই জাতির রিজিক কমিয়ে দেওয়া হয়।’
লেখক: অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়