মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
বাগেরহাটের মোংলায় একটি মৎস্য ঘের থেকে গ্যাস ওঠার খবর পাওয়া গেছে। এই গ্যাস দিয়ে আবার রান্নাও চলছে। উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে।
গ্যাসের সঙ্গে তীব্র বেগে বালি ও পানি প্রায় ১০০ ফুট ওপরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই গ্যাস ওঠার বিষয়টি বুঝতে পারেন এলাকাবাসী। এমন দৃশ্য দেখতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন আশপাশের এলাকার সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দ ও কৌতূহল বিরাজ করছে। রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।
জানা গেছে, উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মিঠাখালীর পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা দেলোয়ার শেখের (৩৫) পৌনে তিন বিঘার চিংড়ি ঘেরের মাটির নিচ থেকে এ গ্যাস উঠছে। সপ্তাহখানেক ধরে গ্যাসের উদ্গিরণ ক্রমেই বাড়ছে। ঘেরটির চারটি জায়গা থেকে প্রতিনিয়ত উঠছে এ গ্যাস।
যদিও এ গ্যাস প্রায় ছয় বছর ধরে উদ্গিরণ হয়ে আসছে। তখন ঝামেলা এড়াতে বাড়ির মালিক আলতাফ শেখ বিষয়টি গোপন রাখেন। কিন্তু দুই বছর আগে মারা যান তিনি। এরপর এক সপ্তাহ ধরে সেই গ্যাসের উদ্গিরণ বেড়ে গেলে তাঁর ছেলে দেলোয়ার শেখ (৩৫) তা কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেন। উদ্গিরণের স্থান থেকে পাইপলাইপের মাধ্যমে চার দিন ধরে রান্নার কাজ করছেন দেলোয়ারের পরিবার।
দেলোয়ার শেখ বলেন, ঘেরের জমিতে ছয় বছর আগে পাইপ বসাতে গিয়েছিলেন। তখনই সেখান থেকে প্রচুর গ্যাস বের হতে শুরু করে। সেই সময়ে সেই গ্যাসের প্রচণ্ড চাপ ছিল। পাইপের মাটি, পানি ও বালি প্রচণ্ড বেগে ও বিকট শব্দে বের হতে থাকে। ভয়ে তাঁরা তখন মাটির ৬০ ফুট গভীরে ঢোকানো পাইপ তুলে ফেলেন। তারপর চলতি বছরে সপ্তাহখানেক ধরে বেশি গ্যাস বের হচ্ছে। এরপর এ গ্যাস কাজে লাগানোর জন্য বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা মোড়লকে দিয়ে ড্রাম ও পাইপের মাধ্যমে গ্যাসের লাইন টেনে রান্নার কাজ করছেন।
দেলোয়ারের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, ৪ দিন ধরে এই গ্যাস দিয়ে রান্না করছেন। সিলিন্ডারের গ্যাসের যেমন চাপ, এ গ্যাসেও প্রায় একই রকম চাপ।
মিঠাখালী বাজারের ব্যবসায়ী মো. বাদশা মোড়ল (৩৩) বলেন, দেলোয়ার তাঁকে ঘের থেকে গ্যাস ওঠার কথা জানিয়ে কীভাবে এর ব্যবহার করা যায় তার ব্যবস্থার জন্য বলেন। পরে তিনি গত সোমবার ঘেরের মধ্যে প্লাস্টিকের ৫০ লিটারের একটি ড্রাম বসিয়ে ও এক ইঞ্চির পাইপ লাগিয়ে চুলায় সংযোগের ব্যবস্থা করেন।
তেল, গ্যাস, খনিজসম্পদ, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মোংলার আহ্বায়ক মো. নুর আলম শেখ বলেন, মিঠাখালী গ্রামের দেলোয়ারের ঘের থেকে তীব্র বেগে গ্যাসের উদ্গিরণ হচ্ছে। স্থানীয় মানুষ পাইপ দিয়ে গ্যাসের চুলার সঙ্গে সংযোগ দিয়ে রান্না করছেন। সরকারের কাছে বাপেক্সের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টি বাপেক্সকে জানানো হবে।