অষ্টগ্রাম ও বাজিতপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও বাজিতপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বর্ষার পানি দ্রুত চলে যাওয়ায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে জেলেরা হাওর, নদী, খাল ও নালায় মাছ ধরছেন।
গত সোমবার অষ্টগ্রাম উপজেলার কাস্তুল ও দেওঘর ইউনিয়নের আলীনগর হাওর, ধলেশ্বরী নদী, বাজিতপুর উপজেলার হুমায়ুনপুর ও মাইজচর ইউনিয়নের জোয়ানশাহী হাওর, ঘোড়াউত্তা নদী, সারিগাঙ্গ, দাড়ি গাঙ্গসহ বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। একশ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবী মাছ ধরায় ব্যবহার করছেন ছোট ফাঁসের বিভিন্ন জাল। দোয়ারি বা চায়না ম্যাজিক ও কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি সর্বত্রই চোখে পড়ে। নিষিদ্ধ এসব জাল থেকে রেহাই পাচ্ছে না পোনা মাছও। এতে হাওরাঞ্চলে মাছের বংশ বিস্তার হুমকির মুখে পড়েছে। সচেতন মহল মনে করছেন, এভাবে নির্বিচারে মাছ ধরা হলে অল্প সময়ের মধ্যেই হাওরে মাছের প্রকট সংকট দেখা দেবে।
এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাঙ্গের মাঝে বাঁশ দিয়ে মাছের অভয়াশ্রম নির্মাণ করছেন স্থানীয় ইজারাদারেরা। এতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে নৌ চলাচলে। মাঝেমধ্যে ঘটছে দুর্ঘটনাও।
স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে দরিগাঙ্গে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করা কবির মিয়া (৪৫) বলেন, ‘সবাই তো মারে (ধরে), তাই আমিও কারেন্ট জালে মাছ ধরি। কী করমু কন? গরিব মানুষ পেটের দায়ে মাছ ধরি, না হলে কি করে খামু?
অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহ মিয়া (৫৩) বলেন, ‘আগে কি মাছ পাইতাম, এখন আজেবাজে জাল দিয়্যা ছোট বড় মাছ ধইরা মাছ সম্পদ শেষ কইরা ফালাইতাছে। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।’
এই বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার পাল বলেন, ‘চায়না ম্যাজিক ও কারেন্ট জাল দেশের মৎস্য সম্পদের জন্য বড় ধরনের হুমকি। আমরা গত সপ্তাহে হাওরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করি। তারপরও নিষিদ্ধ এসব জালের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। শুধু প্রশাসনের পক্ষে এসব জালের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়। হাওর পাড়ের লোকজনের সচেতনতাও এ ক্ষেত্রে জরুরি।’