কলকাতা প্রতিনিধি
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সস্ত্রীক ভারতীয় প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতসহ ১৩ জনের মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে। এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিংয়ের নেতৃত্বে তিন বাহিনীর বিশেষজ্ঞরা তদন্ত করবেন বলে গতকাল জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। আজ শুক্রবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দিল্লিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে জেনারেল রাওয়াতের। বাকিদেরও শেষকৃত্য হবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়। এদিকে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে হেলিকপ্টারের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে তদন্তের কাজে গতি আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বুধবারের ওই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দেহের বেশির ভাগ অংশই দগ্ধ হয়ে যাওয়ায় নিহতদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থাতেই কফিন বন্দী করে সস্ত্রীক জেনারেল রাওয়াতের মরদেহ পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। বাকিদের লাশও পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের ঠিকানায়।
গতকাল দুর্ঘটনা নিয়ে জাতীয় সংসদে ভাষণ দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে সুলুর এয়ারবেস থেকে রওনা দিয়েছিল হেলিকপ্টারটি। ১২টা ১৫ মিনিটে ওয়েলিংটনে হেলিকপ্টারটির অবতরণের কথা ছিল। সেখানে প্রতিরক্ষা কলেজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা ছিল বিপিন রাওয়াতের। কিন্তু ১২টা ৮ মিনিট নাগাদ হেলিকপ্টারের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে কন্ট্রোল রুম। এর পরপরই গ্রামবাসীদের চোখের সামনে জেনারেল রাওয়াত ও তাঁর সফর সঙ্গীদের নিয়ে বিধ্বস্ত হয় হেলিকপ্টারটি।
জন্মসূত্রে উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা জেনারেল রাওয়াতের মৃত্যুতে সেখানে চলছে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক। জেনারেল রাওয়াতের সঙ্গে তাঁর নিরাপত্তায় নিযুক্ত সতপাল রাইও মারা গেছেন। আর দুর্ঘটনায় শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হওয়া গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং বর্তমানে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেমে ওয়েলিংটন সামরিক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বিপিন রাওয়াতসহ ১৩ জনের মৃত্যুর পর তাঁদের বহনকারী রাশিয়ার তৈরি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারটি কীভাবে বিধ্বস্ত হলো, তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলছে, নীলগিরি পাহাড়ে ঘন কুয়াশার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
আপাতত তিন বাহিনীর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি জেনারেল রাওয়াতের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে আদৌ আর কাউকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান করা হবে কি না, তা নিয়েও চলছে আলোচনা।