সিলেট প্রতিনিধি
সিলেট মহানগরীতে বেড়েছে চোখ ওঠা বা কনজাংটিভাইটিস রোগের প্রাদুর্ভাব। ওষুধের দোকানগুলোতে দেখা দিয়েছে চোখের ড্রপের সংকট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আক্রান্ত মানুষজন। মহানগরীর উত্তর বাগবাড়ী এলাকার শিবু দাস বলেন, ‘দুর্গাপূজার শুরুর দিন থেকে চোখ উঠেছে। আমার পর ঘরের প্রায় সবার চোখ উঠেছে। তাই পূজায় কোনো আনন্দ করতে পারিনি। ডাক্তার দেখিয়েছি, কিন্তু ওষুধ কিনতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। প্রায় ১০টা ফার্মেসি ঘুরে একটা চোখের ড্রপ কিনতে পেরেছি।’
একই সমস্যার কথা বললেন নগরীর জালালাবাদ এলাকার মইনুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমার ৮ মাসের নাতিসহ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের চোখ উঠেছে। ডাক্তার যে ওষুধ দিয়েছেন সেটা ফার্মেসিতে নেই। আমার নিজের পাড়াসহ অন্যান্য এলাকার প্রায় ২০টি ফার্মেসি ঘুরে ওষুধ পেয়েছি। তাও ডাক্তার যে কোম্পানির ওষুধ দিয়েছেন সেটা না। অন্য কোম্পানির ওষুধ নিয়েছি।’
সরেজমিনে নগরীর বেশ কয়েকটি ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চোখ ওঠা রোগীর অনুপাতে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ড্রপ সরবরাহ করতে পারছেন না। নগরীর ডাক্তারপাড়া খ্যাত স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকার ফার্মেসিগুলোতেও পাওয়া যায়নি চোখের ড্রপ। ফেয়ার মেডিকেল স্টোরের প্রোপ্রাইটর কিষানু সাহা বলেন, হঠাৎ চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই ড্রপসহ এই রোগ সংশ্লিষ্ট ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কয়েক দিন গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ঔষধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক শিকদার কামরুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ করে কনজাংটিভাইটিসের (চোখ ওঠা রোগ) প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় ওষুধের বাজারে ড্রপের কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কেন না চোখের এই ড্রপ কোম্পানিগুলো স্টক করে রাখে না। এ ছাড়া এই ওষুধের খুব প্রয়োজনীয়তা দেখা না দিলে বেশি ব্যবহারও হয় না। তাই হঠাৎ করে এত রোগী সংক্রমিত হওয়ায় ওষুধের কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে এটা সাময়িক সময়ের জন্য। আগামী দুই একদিনের মধ্যে বাজারে ওষুধ আসতে শুরু করবে।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমি প্রায় ১০টা কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে এই ড্রপ বাজারজাত করতে পারবে তারা। আর চোখের ড্রপ অন্যান্য ওষুধের মতো তৈরির পরপরই বাজারজাত করা যায় না, এগুলো তৈরির পর মাইক্রোবায়োলজিক্যাল ল্যাব টেস্টিং করার পর বাজারজাত করতে হয়। তাই চোখের এই ড্রপটা বাজারে আসতে কিছুটা সময় লাগছে।’